টাংগাইল এর সম্ভাবনাময় পণ্যঃ মধু

মধু নাম শুনলেই ছোট বেলার এই কবিতার লাইন গুলো মাথায় আসবেই
মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচিদাঁড়াও না একবার ভাইঐ ফুল ফোঁটে বনে, যাই মধু আহরনেদাঁড়াবার সময় তো নাই
মৌমাছি মধু আহরণ করে ফুল থেকে, সেই মধু চাক থেকে সংগ্রহ করে মৌয়ালরা সেগুলো পরিস্কার করে আমরা খাই। মৌমাছি যেমন অনেক ফুল থেকে মধু আহরণ করে থাকে।
আমাদের একটা ভুল ধারনা আছে তা হলো অনেকেই ভাবি যে ফুল মানেই বাগানের গোলাপ গাধা,শিওলি অমুক তুমুক ফুল,এসব ফুল যখন না থাকে তখনো কিন্তু মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে,কিভাবে? আমাদের আশেপাশের প্রায় সব গাছেরই ফুল হয়ে থাকে তো মাছিরা সেসব ফুল থেকেও মধু সংগ্রহ করে থাকে।
মৌমাছির অনেক প্রকার জাত রয়েছে,আমরা সাধারণত দুই জাতের মাছি বেশি দেখে থাকি,একটা হলো বুনোমৌমাছি আরেকটা বুনো হলেও তাদের বস করে পালন করা যায়।একটা একটু বড় আকারের হয় অন্যটা ছোট আকারের,একটা গাছের ডালে বাসা করে আরেকটা, মাটির গর্ত,মাচার নিচে, অথবা বাড়ির আনাচে কানাচে যেখানে মানুষের চলাচল একটু কম।
আকারে ছোট মাছি গুলো বাক্সে ভরে পালন করা যায়,আর এই বাক্স গুলোকে যখন সরিষা ক্ষেতের ভিতরে রাখা হয়, সে মাছি গুলো শুধু সরিষা ফুল থেকেই মধু সংগ্রহ করে তখন তার নাম হয়ে যায় সরিষা ফুলের মধু।
আবার একই মাছিকে যদি সূর্য্যমুখির বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় তারা শুধু সূর্য্যমুখির মধু সংগ্রহ করবে তখন তার নাম সূর্য্যমুখি ফুলের মধু।
এভাবে এই মাছিগুলোকে যখন যে বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেইসব ফুলের মধু কালেক্ট করে দেয়।
অন্য দিকে বড় মাছি গুলো আপনি চাইলে তাড়িয়ে দিতে পারবেন কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও কোথাও বসাতে পারবেন না এটা সম্পুর্ণ তাদের ইচ্ছেতে।ছোট মাছি গুলোর রানি কে সরিয়ে নিলে তারা আপনার পিছু পিছু আসবে কিন্তু এই বড় মাছি গুলো তাও আসেনা।
এজন্যই প্রাকৃতিক চাকের মধু খুবই কম পাওয়া যায়,তবে আমাদের টাংগাইলে এসব চাক প্রচুর পরিমানে আছে,তারপরো আমরা প্রাকৃতিক মধু পাইনা কারন কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী আসল নকল মিক্স করে চড়া দামে মুনাফা অর্জন করে থাকে।
আমি নিজেও এসব সম্পর্কে তেমন জানতাম না যদি না নিজে এসবের পিছনে ঘুরতাম,আমার উদ্যোগে প্রাকৃতিক মধু সেল করি তাই অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।
এক মৌয়ালের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি স্বিকার করে বলেন ভাইজান আমরা ন্যায্য দাম না পাইয়া এসব ভেজাল করি,সবাই চায় ভালো পন্য কিন্তু দাম দিতে চায় কম আমাদের কি দোষ কইন?.
আমি কোন উত্তর দিতে পারিনি,আপনার কাছে কোন উত্তর আছে? পরে আমি সেই মৌয়াল কে আমার নাম্বার দিয়ে দিয়েছি যখনি কোন চাক পায় আমাকে কল দেয় আমি দাড়িয়ে থেকে চড়া দামে তার থেকে মধু সংগ্রহ করি।
চড়া দাম মানেই যে সেরা তাও কিন্তু নয়,তাই চড়া দাম যেমন দিব তেমনি চড়া মানের মধুটাও নিশ্চিত হয়েই নিব।।
যাই হোক কাজের কথা হলো যেহেতু আমাদের টাংগাইলে প্রচুর প্রাকৃতিক চাক,এবং প্রচুর সরিষা ও অন্যান্য ফুলের চাষ হয়,তাই এখানে আমরা চাইলে প্রাকৃতিক অথবা চাষের মধু নিয়ে কিন্তু নিজেদের উদ্যোগ শুরু করতে পারি,বাজারে কিন্তু যথেষ্ট মধুর চাহিদা রয়েছে জাস্ট প্রমান করতে হবে আপনার টা সেরা মানেত কিনা।
এবার আসুন জেনে নেই মধুর উপকারীতা,কেন এটাকে সকল রোগের ঔষধ বলা হয়?মধু স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
মধু হজমে সহায়তা করে এবং ক্ষুধা বাড়ায়।
সর্দি, কাঁশিতে খুবই কার্যকর।
পুরনো আমাশয়, পেটের পীড়া সহ নানা রোগের উপশম করে।
ত্বকের যত্নে মধু খুব কার্যকরী।
হৃদরোগ এ মধুর ব্যাপক কার্যক্ষমতা রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
মধু নিয়মিত খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা ঠিক থাকে এবং রক্ত স্বল্পতায় খুব দ্রুত কাজ করে ।
আলসার ও গ্যাস্ট্রিক এর জন্য উপকারি।।
বাতের ব্যাথা সারাতেও বেশ কাজ করে
শরীরের দূর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে৷
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা জানি তাই বললাম এগুলো ছাড়াও শত রোগের ঔষধ হিসেবে মধু অতুলনীয়।
মধুতে অনেক উপকরণ এর মধ্যে প্রধান হলো সুগার। আমরা কিন্তু সুগার সব সময় এড়িয়ে চললে ও মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রক্টোজ দুটি সরাসরি মেটাবোলাইজড হয়ে যায় যা ফ্যাট হিসেবে জমা হয়না।
মধুতে অনেক ধরনের ভিটামিন, আয়রন, প্রোটিন , হরমোন, এসিটাইল কোলিন, বোরন, ক্রমিয়াম, সাইট্রিক এসিড, টারটারিক এসিড সহ আছে অনেক অনেক ধরনের উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনি শক্তিবর্ধক এবং বিভিন্ন রোগের উপশমে উপকারি।
হাসান সরকার ছালেহীন।
অকৃত্রিমঃ সকল প্রকার অর্গানিক পন্যের নির্ভরযোগ্য অনলাইন সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান।
https://www.facebook.com/Hasansalehinbd
https://www.facebook.com/AuKrittim