টাংগাইল ই-কমার্সে উই জেলা প্রতিনিধি মিষ্টি

মিষ্টি নাম শুনলেই যেমন মনের মধ্যে খচ করে নাড়া দেয় টাংগাইলের চমচমের নাম।কিছুদিন পর মিষ্টি নাম শুনলেই সবার চোখে চোখে ভাসবে মিষ্টি আপুর অবদান।আমার অন্যতম প্রিয় শিল্পী নকুল কুমারের একটা গান দিয়ে শুরু করছি।

খালি কলসি বাজে বেশি ভরা কলসি বাজেনারুপ নাই যার সাজন বেশি রুপের মাইয়া সাজেনা

আসলেই মিষ্টি আপুকে নিয়ে কি লিখব বলেন?তার কলস যে ভরা তা আমরা সবাই জানি।দুই সপ্তাহ আগেই আমাদের একটা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, আমরা একটিভ উদ্যোক্তাদের নিয়ে উদ্যোক্তা দিবস পালন করব।যাতে তারা আরও উৎসাহিত হোন।যিনি আমাদের জন্য এত কিছু করছেন তাকে রেখেই আমরা কিভাবে শুরু করি বলেন,অবশেষে আমাদের সহ প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত পরামর্শ মোতাবেক আপুকে নিয়ে আজকের এই দিবসের কার্যক্রম শুরু করা হলো।যদিও মিষ্টি আপুর আপত্তি ছিল,তিনি বলেছিলেন উদ্যোক্তাদের মাঝে থেকে কাউকে দিয়ে শুরু করতে কিন্তু আমরাই আপুকে দিয়ে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেই।★মিষ্টি আপু উইতে জয়েন হয়েছেন ২০১৯ এর ১৩ ই সেপ্টেম্বর।

★একটিভ হন জানুয়ারি ২০২০ থেকে।★১০ম আড্ডা থেকে তিনি সব গুলো আড্ডায় নিয়মিত ছিলেন।★অন্যান্য সব গ্রুপ ছেড়ে শুধু উইতেই লেগে ছিলেন।★উনার উইতে পোস্ট সংখ্যা হাজারের উপরে।★হাইটেক পার্কের ৮০ ঘন্টার ই কমার্স ট্রেইনিং করেন।★টাংগাইল ড্রিস্টিক হেডের দায়িত্ব পান ০৫/০১/২০২১ তারিখে।★টাংগাইল মিটাপ হয় আপুর দায়িত্বে ২৩/০১/২০২১ তারিখে।সবার সহোযোগিতায় তা সফল হয়।★আপুর দায়িত্বে আরও ৬ জন সহ প্রতিনিধির দায়িত্ব পাই, জিয়া আপু,সুবর্ণা আপু,নাসরিন আপু,শিল্পি আপু।★২৪/০৫/২০২১ তারিখে আপুর ডাকে সুপার একটিভ উই উদ্যোক্তারা মিটাপে আসেন ৩৪ জন।যেখানে উই সফটওয়্যার, ই টিন,সাবস্ক্রাইবার,আইসিটি গ্রান্ট সহ নানা বিষয়ে সবাইকে বিস্তারিত বুঝিয়ে দেন।★মিষ্টি আপুর সবাইকে যেমন বুঝানোর ক্ষমতা তেমনি অন্যকে বুঝার ক্ষমতাও চুড়ান্ত লেভেলের।।।★যারা সৎ এবং ক্লিয়ার কাট তাদের জন্য মিষ্টি আপু চমচমের মতই মিষ্টি।

★যাদের মনে কুটুলতা (ভেজাল) আছে তাদের কাছে মিষ্টি আপু(কাচা বা শুকনো লংকা)😋😷

মিষ্টি আপুর উদ্যোগ উনার এক মাত্র কন্যার নামে

🎯আরওয়া

https://www.facebook.com/arwaacollection

মিষ্টি আপুর আসলেই গুনের শেষ নেই,আশা রাখি আপুর সাথে থেকে নিজের মধ্যেও এসব গুন ধারন করতে পারব।সবার নিরলস কাজ,সহযোগিতা ও দোয়াই পারে আমাদের টাংগাইল কে দেশের সেরা ই-কমার্স জেলায় পরিনত করতে।

https://www.facebook.com/naharay.misty

হাসান সরকার ছালেহীন

স্বত্বাধীকারী Ourtangail.com & aukrittim.com

ই-কমার্স সম্ভাবনায় টাংগাইল ।

নদীচর খাল বিল গজারির বন

টাংগাইলের শাড়ি তার গর্বের ধন।


যদিও টাংগাইলের নাম আসলেই টাংগাইলের চমচমের কথা মনে পড়ে যায়, যে খেয়েছে সেও আবার খাইতে চায়। টাংগাইল দেশের সব জেলার চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় এলাকা,এখানে অনেক খাত আছে যা দিয়ে ই কমার্সে রাজ করা সম্ভব, আমাদের অজানায়, অবহেলায় বা সুযোগের অভাবে সে খাত গুলোতে মরচে ধরে গেছে,কোন কোন টা কোনরকম ভাবে টিকে আছে।

টাংগাইলের চমচমঃ

এই শব্দ টা শুনলেই অনেক পুরোনো একটা গানের কথা মনে বাজে, টাংগাইলের চমচম বগুড়ায় দই। আগের দিনে এই গানের বেশ কদর ছিল,আলহামদুলিল্লাহ চমচম তার আদী ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে।এই চমচমের ঐতিহ্য কিন্তু একদিনের নয়,প্রায় ১৫০ বছর ধরে বহন করে চলেছে। মিষ্টি, দধি, দুগ্ধজাত দ্রুব্যের জন্যে টাংগাইল জেলা প্রসিদ্ধ এ নিয়ে কারো কোন দ্বীমত নেই।পোড়া বাড়ির চমচম বাঘিলের দধি,ঘি মাখন ইত্যাদি দ্রুব্যের ও বেশ কদর রয়েছে। পোড়াবাড়ি,বাঘিল,নাগরপুর,জামুর্কি,পাকুল্যা কালিহাতির,নরদই,নিশ্চিনপুর,ভুয়াপুর,ও টাংগাইল মিষ্টি তৈরিতে উল্যেখ্যযোগ্য।

টাংগাইলের তাত শিল্পঃ

টাংগাইল শাড়ির নাম শোনেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়াযাবে,দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম ধরে রেখেছে টাংগাইলের শাড়ি। এ শাড়ির নকশা,বুনন,পাড়,এবং রঙের জন্য এ শাড়ির ব্যাপক চাহিদা দেশ বিদেশে।এই শাড়ি তৈরিতএ যারা জড়িত তাদের তাতি বলা হয়,পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী ১২ টি থানার মোট তাত রয়েছে ৩৪৬৭৮ টি, আর এসব তাতে কর্মরত আছেন প্রায় ৭৬০০০ তাতি।বর্তমানে প্রায় ৭০০০ তাত বন্ধ রয়েছে। এই তাতিদের কোন পেশাগত প্রশিক্ষণ নেই, তবুও এরা বংশপরিক্রমায় পেয়েছে,দাদার থেকে বাবা শিখেছে,বাপের থেকে ছেলে,এভাবে শিখেও তাদের কাজ সবাইকে মুগ্ধতায় ভরিয়ে দেয়। কথিত আছে টাংগাইলে নাকি একসময় মসলিন শাড়িও বুনানো হত।যদিও এখন তা নেই,এ শাড়ির ব্যাপক চাহিদা থাকার পরেও বিপণন ব্যাবস্থা ভালো না থাকায় ও শিল্প আজ হুমকির মুখে। তাতের সাথে জড়িত হিন্দু ব্যাক্তিদের কে তাতি বলা হয়,আর যারা মুসলমান তাতিদের কারিগর বা জোলা বলা হয়।তাতের এলাকা সমুহ,আদি টাংগাইল,পাথরাইল,নলশোধা,আকদ,ঘারিন্দা,ছাতিহাটি,গোলরা,রামপুরা,জোয়াইর,মোমিন নগর ও করোটিয়াতে তাতের সবকিছু উৎপাদন হয়। যদিও তাত বলতেই আমরা বুঝি শাড়ি কাপড়,আপনি জানেন কি তাতে, গামছা,লু্ঙি,থ্রিপিস,জামদানী, সিল্ক থ্রিপিস সহ আরও অনেক কিছু উৎপাদন হয়।

ধাতু শিল্প (তামা লোহা কাসা পিতলঃ

আমাদের বাড়িতে এখনো কাসার থালা গ্লাস চামিচ আছে,ছোট বেলায় আমরা এসব প্লেট এ ভাত খেয়েছি,এখন ভুলে গেছি কাসার থালায় খাওয়ার স্বাদ। লোহা, তামা,পিতল,কাসা,সোনা রুপা ইত্যাদি ধাতু নিয়ে যারা কাজ করে থাকেন তাদের কর্মকার বলা হয়।ধাতু শিল্পেও টাংগাইল এক সময় বেশ বিখ্যাত ছিলো,এখনো একদম হারিয়ে যায়নি যদিও অল্প,তবুও তা ধরে রেখেছে। টাংগাইলের কাগমারি ও মগড়া গ্রামের কর্মকারেরা এখনো কাসার জিনিস পত্র তৈরী করে থাকেন,তারমধ্যে কলসি,জগ,ঘটি,বদনা, লোটা,থালা,গ্লাস,বোল,ডেচকি,চামচ,খুন্তি,ঘন্টা,বাটি,পুস্পাধার ইত্যাদি অন্যতম। টাংগাইলের কালিহাতি, ঘাটাইলের পাকুটিয়া গ্রামের কর্মকার রা লৌহজাত পন্য তৈরিতে বেশ সুনাম ধরে রেখেছে,তারমধ্যে, ছুড়ি,বটি,কাস্তে,দা,শাবল,কোদাল,লাংগল,হাতুরি,খুন্তা,কড়াই, ইত্যাদি অন্যতম।

মৃৎশিল্পঃ

মানুষ আর মাটি আমাদের কত বড় সম্পদ তার প্রমান মেলে টাংগাইলের মৃৎশিল্পে। টাংগাইলে প্রচুর এটেল মাটি পাওয়া যায় বিধায় এ শিল্পের বিকাশ ঘটে আদিকালে থেকেই। আজকের ২০২১ শতকে এসেও সানকিতে ভাত খাওয়ার ইচ্ছে পোষন করেন অনেকে,মাটির হাড়ির ভাতের নাকি অন্যরকম স্বাদ৷ এটাও কারো কারো দাবি,মাটির কলসিতে পানি রাখলে যে তা বেশ ঠান্ডা থাকে এটাও আমরা জানি। আগের দিনে ধাতু শিল্পের বিকাশ হলেও সবাই সেসব কিনতে পারত না,তাই প্রায় বেশির ভাগ মানুষই মাটির জিনিসপত্র ব্যাবহার করত,তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ মাটির হাড়ি,কলস,দুধ দোয়ানোর জন্য দোনা,দইয়ের ডুফি,ঢাকনা,মাটির গ্লাস,জগ, ভাতের হাড়িতে যেন পিপড়ে না উঠে তার জন্য এক ধরনের পাত্র,বাচ্ছাদের খেলনার কথা না বললেই নয়,খুটি পাতিল যে খেলেনি তার শৈশব বৃথা,ছোট ছোট পুতুল,মাটির ব্যাংক,সিল পাটা,গরু ঘোড়া,মহিষ,হাতি সহ বিভিন্ন ধরনের খেলনার সমাহার এই মৃৎশিল্পে।এছাড়া রয়েছে ফুলের টব,ফুলদানি,সহ নানা রকম মাটির বড় বড় চাড়ি,কোলা,মটকি, যেগুলোতে প্রায় ১-২ মন ধান রাখা যায়। যারা মাটির জিনিস বানায় তাদের বলা হয় কুমার, গোপালপুর থানার সূতী, ডুবাইল,বাগুহাটা,কালিহাতির বল্লা পালপাড়া,হামিদপুর উত্তর বেতডোবা, দক্ষিন বেতডোবা পাল পাড়া,টাংগাইল সদরের গালা,করটিয়া,মির্জাপুরের জামুর্কি, মধুপুরের ধনবাড়ি সহ আরও বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এই কুমাড়েরা,তারা প্রতিনিয়ত আমাদের এই ঐতিহ্য কে টিকিয়ে রাখার লড়াই করে চলেছে। প্লাস্টিক, মেলামাইন,সিসা, কাচ, কড়ির দাপটে মাটির জিনিসপত্র আজ বিলিন হওয়ার পথে।

বাশ ও বেত শিল্পঃ

আসলে বাশ আমাদের পারিবারিক জিবনে কতটা জড়িয়ে আছে যারা গ্রামে থাকেন তারাই বুঝতে পারবেন। বাশ ও বেত শিল্পের সুপ্রাচীন ইতিহাস রয়েছে আমাদের প্রানের টাংগাইলের। বাশ দিয়ে শুধু বাসি হয়না হয় না না বিধ অতি প্রয়োজনীয় জিনিস, বাশ কেটে তা সুন্দর মত চেছে,ছুলে তৈরি হয়,ধাড়ি বা চাটাই,চাটাই দিয়ে ঘরের বেড়া,চালের সিলিং, বা ধান রাখার ডোল,ও বেড় তৈরিহয়,এছাড়া টুকড়ি,ঝাকা,ধামা,খালই,কুলা,চালনি,তালাই,মাছ ধরার ধিয়ারি,গাছে উঠার মই,বা সিড়ি সহ অনেক কিছুই তৈরি হয় বাশ থেকে। বেতঃ বেত থেকে হয় পাটি,আরে জাতের বেত থেকে হয়,দোলনা, চেয়ার,টেবিল,মোড়া,সহ নানা ব্যাবহারি জিনিসপত্র। বেতের শীতল পাটির কদর এক সময় দেশ ছাড়িয়ে ভারতে ছড়িয়েছিল,এখন এই শিল্প প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে। আমাদের টাংগাইলে এখনো যথেষ্ট কারিগর আছে,বিশেষকরে,এলাসিনের কারিগরেরা বেশ ভাল মানের পাটি বুনিয়ে থাকেন,এছাড়াও এ জেলার বিভিন্ন এলাকায়, তারটিয়া,মটরা,এলাসিন,কালিহাতি, মির্জাপুরে পাটুনিনিরা বেশ সমাদৃত। এই শীল্পের সম্ভাবনা এখনো প্রচুর তবে কাচামালে অভাব এবং ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় এটি বিলুপ্ত হতে চলেছে।

কাঠের ঘানীঃ

তেলি বা কুলু সম্প্রদায় তিল, তিসি,সরিষা থেকে তেল তৈরি করে বিক্রি করত। এখন মেশিনের মাধ্যমে এসব থেকে তেল উৎপন্ন হওয়ায়,ঘানি মার খেয়ে যায়। ঘানিতে একটা গরু বা বলদ দিয়ে তেল।ভাংগানোর কাজ করা হয়,যা অনেক সময় সাপেক্ষ, অন্যদিকে মেশিনে খরচ কম ও তেল বেশি পাওয়ায় সবাই সেদিকে ঝুকেছে। ঘানির তেল মানসম্মত ও স্বাস্থকর হলেও তা মেশিনের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে। মুচি ও ঋষিঃ এরা সাধারণত জুতা তৈরি ও মেরামত করে থাকে,আবার কেউ কেউ নিজেরা জুতা বানিয়ে বিক্রি করে,কেউ ঢোল,তবলা বানিয়ে জিবিকা নির্বাহ করছে। কেউ কেউ চামড়ার বেল্ট,ব্যাগ এসব নিয়েও কাজ করছে।এ খাতেও বেশ সুযোগ রয়েছে।

কাগজ শিল্পঃ

টাংগাইলের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে শত বছর আগে এ জেলায় বেশ কিছু কাগজ শিল্প গড়ে উঠেছিল,সেগুলো ছিল হাতে চালিত,যন্ত্রের বিকাশ ঘটায় এ শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যায়।১৯৭০ সালে আটিয়ায় পাট থেকে কাগজ তৈরি হত বলে যানা যায়।

★টাংগাইলে গোপালপুর, সহ অনেক এলাকায় প্রচুর পাট জন্মায় কিন্তু এখানে কোন পাটকল নেই,নেই পাটের তেমন কোন উদ্যোগ।

★টাংগাইলে সদর সহ বেশ কিছু জায়গায় যেমন ভুঞাপুর,কালিহাতি,দেলদুয়ার, নাগরপুরে প্রচুর আখের চাষ হলেও নেই কোন চিনিকল বা কোন ছোট বড় উদ্যোগ।

★কাপড় উৎপাদনে টাংগাইল বিখ্যাত হলেও,নেই কোন বৃহৎ কাপড়ের মিল।।

★মধুপুর,সখিপুর,মির্জাপুর,ঘাটাইলের পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর কাঠাল উৎপন্ন হয়,পরিবহন সমস্যার কারনে বেশির ভাগই নষ্ট হয়।কাঠাল নিয়ে কোন কিছু করা যায়।

★মধুপুরে প্রচুর আনারস হয়,এটার প্রক্রিয়াজাত করে অনেক শিল্প গড়ে উঠতে পারে। অবশেষে হলফ করে বলাই যায়, টাংগাইলে যে সমস্থ খাত আছে একটু ঠিক ঠাক যোগান দিতে পারলে,ভাল কিছু করাই সম্ভব।

হাসান সরকার ছালেহীন।

https://www.facebook.com/Hasansalehinbd