পদ্ম বিল / এখানকার মানুষ বলে জলই বিল পোষনা,কালিহাতী,টাংগাইল। আমাদের টাংগাইলে নদ নদী কম থাকলেও খাল বিল রয়েছে অনেক।যদিও অনেক খাল বিল আজ বিলিন হওয়ার পথে,তার পরও এখানো অনেক বিল আছে যেগুলো দেখলে প্রান জুরিয়ে যায়। আমার দেখা বিলের মধ্যে এটা একটা অসাধারণ জায়গা,ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিবে এর রুপ বৌচিত্র। এখানে অনেক নৌকা আছে চাইলেই আপনি বিল এ ঘুরে বেরাতে পারবেন তাও নাম মাত্র খরচে। এই জায়গাটি একটু তদারকি করলে দর্শনিয় এই বিল হতে পারে পর্যটনের একটি যায়গা। এখানে আসতে চাইলে আপনাকে, টাংগাইল সদর থেকে বাস বা সি এনজি যোগে কালিহাতি বাসস্ট্যান্ডে আসতে হবে।তার পর এখান থেকে আপনি রিক্সা অটো অথবা সি এন জি তে যেতে পারেন এই অপরুপ যায়গায়।
দেলদুয়ারের বিখ্যাত জমিদার পরিবারে ১৮৭২ সালে ২৫ আগস্ট আবদুল করিম গজনবীর জন্ম। জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে আবদুল করিম গজনবী রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি বঙ্গ বিভক্তির সমর্থক ছিলেন। করিম গজনবী ব্রিটিশপন্থী ছিলেন তাই সরকার কর্তৃক মনোনীত হয়ে স্যার আবদুল করিম গজনবী বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯০৯ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের মুসলমান এলাকা থেকে ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে এবং ১৯১৩ থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত বঙ্গ প্রেসিডেন্সির মুসলমান এলাকা থেকে ভাইসরয়েস কাউন্সিলে সরকার মনোনীত সদস্য ছিলেন। আবদুল করিম গজনবী ১৯২৩ ও ১৯২৬ সালে পরপর দু’বার ময়মনসিংহ দক্ষিণ-পূর্ব (মুসলমান) এলাকা থেকে বঙ্গীয় আইনসভায় সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯২৮ সালে ‘নাইট’এবং ১৯৩৩ সালে ‘নওয়াব বাহাদুর’খেতাবে ভূষিত হন তিনি। স্যার আবদুল করিম গজনবী ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত বেঙ্গল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। স্যার আবদুল করিম গজনবী রচিত গ্রন্থ : (১) মুসলিম এডুকেশন ইন বেঙ্গল (২) পিলগ্রিম ট্রাফিক টু হেজাজ এন্ড প্যালেস্টাইন (৩) দি ওয়ার্কিং অব দি ওয়ার্কিকাল সিসটেম ইন বেঙ্গল। ব্রিটিশ রাজ্যের কূটনীতিক হিসেবে অনেকবার সিরিয়া, প্যালেস্টাইন, মিশর, সৌদি আরব প্রভৃতি দেশে গমন করেন। স্যার আবদুল করিম গজনবী ১৯৩৯ সালের ২৪ জুলাই কলিকাতায় বালিগঞ্জে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।
জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরী এই জমিদারবাড়িটি নির্মাণ করেন (১৮৯০)। তিনি তার এলাকার মানুষকে কঠোর হাতে শাসন করতেন। জমিদারবাড়ির অতিক্রম করতে হলে তাঁকে খালি পায়ে ক্রমাগত মাথা ঝুঁকিয়ে আনুগত্য প্রকাশের পাশাপাশি উল্টো হয়ে হাটতে হত। এসকল নিয়ম মানতে বাধ্য করা হত তাদের।[১] হেমচন্দ্র চৌধুরী ১৮৮০ সালে (১২৮৬ বঙ্গাব্দ) মধুপুর উপজেলার আমবাড়িয়া রাজবাড়ি ত্যাগ করে গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের সুবর্ণখালি গ্রামে নতুন রাজবাড়ি নির্মাণ করেন। তিনি সেখান থেকেই জমিদারি পরিচালনা শুরু করেন। সুবর্ণখালি ছিল যমুনা তীরের প্রসিদ্ধ নদীবন্দর। তখন কলকাতার সাথে সহজ যোগাযোগের কারণে সুবর্ণখালিতে আসাম ও কলকাতার স্টীমার আসতো। হেমচন্দ্র চৌধুরী সহ কয়েকজন হিন্দু জমিদারের উদ্দ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ১৯০৫ সালে ময়মনসিংহ হতে জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত রেলওয়ে লাইন সম্প্রসারণ করা হয়। যা রেল ও স্টীমার যোগে ঢাকার সাথে কলকাতার যোগাযোগকে সহজ করে তোলে। হেমবাবু সুবর্ণখালি হতে সরিষাবাড়ি উপজেলার জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কে হেরিংবন্ড করে টমটম বা পালকিতে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেন। জানা যায়, এটিই গোপালপুর উপজেলার প্রথম পাঁকা সড়ক। ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দশকে যমুনার করাল গ্রাসে বিলীন হয় সুবর্ণখালি নদীবন্দর ও হেমচন্দ্রের রাজবাড়ি। সুবর্ণখালি ঐতিহ্য হারিয়ে আজ সোনামুই/সোনামুখী নাম ধারণ করে টিকে আছে।
বিবরণ
হেমচন্দ্র চৌধুরী ১৮৯০ সালে (১২৯৬ বঙ্গাব্দ) শিমলাপাড়া মৌজায় নতুন একটি দ্বিতল রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন। এটি সুবর্ণখালি থেকে তিন কিলোমিটার পুর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। উঁচু ও প্রসস্থ দেওয়ালে ঘেরা বাড়ির ভেতরে সুপেয় পানির জন্য একাধিক কূপ খনন করা হয়েছিল। সেখানে ছিল চিড়িয়াখানা, পূজাম-প, হাতিশালা ও ফুলের বাগান। পরীর দালানের সামনেই ছিল দ্বিতল নাটঘর। বাড়িটির ভেতরে ও সামনে রয়েছে পাকা সান (ইট ও সুরকির) বাঁধানো ঘাটসহ বিশাল পুকুর (দিঘি)। পরীর দালানের আশেপাশে স্বজনদের জন্য সান বাঁধা ঘাট সহ দিঘি ও পাকা বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছিল।
কারুকার্য
ভবনের দেয়াল, পিলার, ফটকে রঙ্গিন কাঁচ ব্যবহার করে ফুল, তারা, গাছ ইত্যাদি তৈরি করা হয়েছে। অত্যন্ত কারুকার্য মন্ডিত, দামি কড়ি ও অপুর্ব পাথরে মোড়ানো অগ্রভাগে দুইটি পরীর ভাস্কর্যসমৃদ্ধ বাড়িটি লতাপাতার অপরুপ নকশায় তৈরি। দিল্লী ও কলকাতার কারিগর ও রাজমিস্ত্রি দিয়ে ইটসুরকির তৈরি বাড়িটি দেখে মনে হয় যেন শিল্পকর্ম। ৬০ একর জায়গার উপর শত কক্ষবিশিষ্ট এ বাড়িটিকে ডাকা হয় পরীর দালান নামে।
বর্তমান অবস্থা
এই জমিদারবাড়ির মূল ভবনটি বর্তমানে হেমনগর ডিগ্রী কলেজ করা হয়েছে। রাজবাড়ির অদুরে দক্ষিণদিকে গড়ে ওঠে বিশাল বাজার। এলাকাটি হেমচন্দ্র চৌধুরীর নামানুসারে হেমনগর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। বর্তমানে (১৯৮৯ সালে) বাড়িটিতে একটি মহাবিদ্যালয় (ডিগ্রী কলেজ) স্থাপন করা হয়েছে।
সাগরদিঘীবাংলাদেশেরটাংগাইল জেলারঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্বে সাগরদীঘি নামক একটি স্থান রয়েছে,এটি ঘাটাইল উপজেলার একটি উনিয়ন। এখানে ১২.৮০ একর জমির উপর একটি বিখ্যাত দীঘি আছে। দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় পাল বংশীয় সাগর রাজা।
অবস্থান
বাংলাদেশেরটাংগাইল জেলারঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্বে সাগরদীঘি নামক স্থানটি অবস্থিত,সাগরদিঘী এটি বিশাল বাজার যার আয়তন ৭/৮ বর্গ কিলোমিটার প্রায়,এখানে রয়েছে একটি কলেজ, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,একটি দাখিল মাদ্রাসা,একটি সরকারী প্রা:বিদ্যালয়, ৭ টি মসজিদ, ৩ টি মন্দির, ১ টি পশু হাসপাতাল,১ ভূমি রেজিস্টারি অফিস,১ বিট অফিস,৩ টি দিঘী,১ টি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, ১টি পুলিশ ইনভেস্ট্রীকেশন কেন্দ্র।
সাগরদিঘীর নিকটতম উল্লেখযোগ্য গ্রামসমূহ,আকন্দের বাইদ, ইন্দ্রাবাইদ,বেইলা,হাতিমারা,শুলাকুড়া,জালালপুর,পাহাড়ীয়া পাড়া,পাগারিয়া পাড়া,তালতলা,মনতলা,সুকতা,হারংচালা।
এলাকার উল্লেখযোগ্য কৃষি কাজ:- কলা,পেঁপে,আম, বেগুন,আনারস, করলা,হলুদ,কচু,ধান,কাঁঠাল,পিয়ারা, এবং লেয়ার মুরগি ও ব্রয়েলার মুরগি ফার্ম সহ আরো অন্যান্য সবজি প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়ে থাকে যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশ ও বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
ইতিহাস
দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় পাল বংশীয় সাগর রাজা। এই দিঘির পশ্চিমপাড়ে শান বাঁধানো ঘাটলার ধ্বংসাবশেষ এখনও লক্ষ করা যায় যা সাগর রাজার বাসস্থান বলে ধারণা করা হয়। এখানকার পূর্ব নাম ছিলো লোহানী। সাগরদীঘি থেকে সামান্য দক্ষিণে এর চেয়েও প্রকান্ড এক দীঘি আছে যার আয়তন হবে ২৫ একর জার নাম বইন্যদীঘি। সাগর রাজার পুত্র বনরাজ পাল এটি খনন করেছিলেন।
১৮৯০ দশকের পূর্বে স্পেনের করডোভা নগরীর আদলে জমিদার বাড়ীটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীতে হামলা করে এবং জমিদার বাড়ীর কূলবধূ সহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে (১৯৭১)। পরবর্তীতে তারা লৌহজং নদীর নৌপথে এ দেশ ত্যাগ করেন। এখানেই তখন মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। এ জমিদার বাড়ীটি পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় (১৯৭২)। এবং পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয় (১৯৯০)।
অবস্থান
মহেড়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে প্রায় আট (৮) একর জায়গা জুড়ে এই মহেড়া জমিদার বাড়ি বিস্তৃত। ঢাকা – টাংগাইল মহাসড়কে নাটিয়াপাড়া বাজার হতে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার পূর্বে মহেড়া জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
দর্শনীয়
এই জমিদার বাড়ির সামনে প্রবেশ পথের আগেই রয়েছে ‘বিশাখা সাগর’ নামে বিশাল এক দীঘি এবং বাড়িতে প্রবেশের জন্য রয়েছে ২টি সুরম্য গেট। এছাড়াও মূল ভবনে পিছনের দিকে পাসরা পুকুর ও রানী পুকুর নামে আরো দুইটি পুকুর রয়েছে এবং শোভাবর্ধনে রয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। বিশাখা সাগর সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে রয়েছে বিশাল আম্র কানন ও বিশাল তিনটি প্রধান ভবনের সাথে রয়েছে নায়েব সাহেবের ঘর, কাছারি ঘর, গোমস্তাদের ঘর, দীঘিসহ ও আরো তিনটি লজ।
অনান্য স্থাপনা
চৌধুরী লজঃ জমিদার বাড়ি প্রবেশের পরেই মূল ফটক দিয়ে দেখা যায় চৌধুরী লজ। এটির গোলাপি রঙের ভবনটির পিলার গুলো রোমান স্থাপত্য শৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে। সুন্দর নকশাখচিত এই ভবনের ভেতরে রয়েছে ঢেউ খেলানো ছাদ। দোতলা বিশিষ্ট এই ভবনটির সামনে রয়েছে সুন্দর বাগান ও সবুজ মাঠ।
মহারাজ লজঃ বাইজেনটাইন স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত মহারাজ লজ ভবনের সামনে ছয়টি (৬) টি কলাম রয়েছে। সেখানে গোলাপি রঙের মহারাজ লজের সামনে রয়েছে সিঁড়ির বাঁকানো রেলিং ও ঝুলন্ত বারান্দা যা ভবনের শোভা বৃদ্ধি করেছে। ভবনটিতে মোট কক্ষ আছে বারো (১২) টি, সামনে বাগান ও পেছনে একটি টেনিসসহ কোর্ট রয়েছে। এই ভবনটি বর্তমানে শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আনন্দ লজঃ মহেরা জমিদার বাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভবন হলো আনন্দ লজ। নীল ও সাদা রঙের মিশ্রনে ভরা ভবনটির সামনে আট (৮) টি সুদৃশ্য কলাম রয়েছে। তিন তলা বিশিষ্ট ঝুলন্ত বারান্দা এ ভবনকে করেছে আরো দৃষ্টিনন্দন। আনন্দ লজের সামনে হরিণ, বাঘ ও পশু-পাখির ভাস্কর্যসহ একটি চমৎকার বাগান আছে।
কালীচরণ লজঃ জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির শেষের দিকে নির্মিত এই কালীচরণ লজ অন্য ভবন থেকে অনেকটা আলাদা। ইংরেজি ‘ইউ’ (U) অক্ষরের আদলে এই ভবনটি ইংরেজ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। অন্যোন্য স্থাপত্য শৈলীর জন্য বিকেল বেলা ভবনের ভেতর থেকে সুন্দর আলোর ঝলকানি দেখা যায়।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানবাংলাদেশের অন্যতম একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ উন্মুক্ত উদ্যান, টাঙ্গাইলেরমধুপুর উপজেলায় অবস্থিত। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে এই বনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা দেয়া হয়।[১] নিসর্গপ্রেমীদের কাছে মধুপুরের জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান।
অবস্থান
রাজধানী শহর ঢাকা থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল এর মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত। টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে রসুলপুর মাজার নামক স্থানে গিয়ে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটক বামদিকে দেখতে পাওয়া যায়। ফটকের পাশেই মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস ও সহকারী বন সংরক্ষকের অফিস অবস্থিত। সেখান থেকে অনুমতি নিয়ে বনের ভিতর ঢুকতে হয়।[২] এই উদ্যান ১৯৮২ সালের হিসাব অনুযায়ি ৮,৪৩৬ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হলে। এটি পূর্বের আয়তন থেকে অনেক ছোট হয়ে এসেছে অনেকের মতে এটি প্রায় অর্ধেক। এই উদ্যান মূলত বিস্তৃত শালবনের খানিকটা অংশ নিয়ে গঠিত।
উদ্ভিদবৈচিত্র্য
শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ, বট সর্পগন্ধা, শতমূলী, জয়না, বিধা, আজুকি/ হারগাজা, বেহুলা প্রভৃতি নানা জাতের বৃক্ষরাজিতে শোভিত এই উদ্যান। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ি আলু, শটি আর নাম না জানা বিভিন্ন ধরনের লতাগুল্ম।
যমুনা বহুমুখী সেতু বা যমুনা সেতুবাংলাদেশেরযমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সেতুটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এটি যমুনা নদীর পূর্ব তীরের ভূঞাপুর(ভুয়াপুর) এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে। এটি বিশ্বে ১১তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু।[১][২]যমুনা বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীর মধ্যে বৃহত্তর এবং প্রবাহিত জল আয়তানিক পরিমাপের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। সেতুটি বাংলাদেশের পূর্ব এবং পশ্চিম অংশের মধ্যে একটি কৌশলগত সংযোগ প্রতিষ্ঠিত করে। এটি অত্র অঞ্চলের জনগণের জন্য বহুবিধ সুবিধা বয়ে আনে, বিশেষত অভ্যন্তরীন পণ্য এবং যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা দ্রুত করে।[৩] পরবর্তিতে এই সেতুর নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। যমুনা সেতু স্থাপনের জন্য প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৪৯ সালে। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রথম এ উদ্যোগ নেন। কিন্তু তখন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর এর কাজ শুরু হয় এবং ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
অর্থ সংস্থান
হুন্দাই $৬৯৬ মিলিয়ন ইউ এস ডলারের বিনিময়ে ১৯৯৪ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মানের কাজ হাতে নেয়; এতে মোট ব্যয়ভারের $২০০ মিলিয়ন ১% নামেমাত্র সুদে IDA, ADB, OECD বহন করে এবং বাকী $৯৬ মিলিয়ন বাংলাদেশ সরকার বহন করে।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম এবং বিশ্বের ১১তম দীর্ঘ সেতু এটি। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে এটি উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশের ৩টি বড় নদীর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম এবং পানি নির্গমনের দিক থেকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম নদী যমুনার উপর এটি নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পুর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। এই সেতু নির্মাণের ফলে জনগণ বহুভাবে লাভবান হচ্ছে এবং এটি আন্তঃআঞ্চলিক ব্যবসায় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সড়ক ও রেলপথে দ্রুত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন ছাড়াও এই সেতু বিদ্যুৎ ও প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালন এবং টেলিযোগাযোগ সমন্বিত করার অপুর্ব সুযোগ করে দিয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেতু এশীয় মহাসড়ক ও আন্তঃএশীয় রেলপথের উপর অবস্থিত। এ দুটি সংযোগপথের কাজ শেষ হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন আর্ন্তজাতিক সড়ক ও রেলসংযোগ স্থাপিত হয়।সেতুটি নির্মাণে মোট খরচ হয় ৯৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইডিএ, জাপানের ওইসিএফ প্রত্যেকে ২২ শতাংশ পরিমাণ তহবিল সরবরাহ করে এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ব্যয় বহন করে বাংলাদেশ। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিঃ মিঃ এবং প্রস্থ ১৮.৫ মিঃ।
যমুনা নদীর প্রধান চ্যানেলের প্রস্থ ৩.৫ কিলোমিটারের বেশি নয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে এবং বন্যাজনিত কারণের জন্য আরও কিছুটা প্রশ্বস্ততা বাড়িয়ে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু যথেষ্ট বলে বিবেচনা করা হয়। ভৌত অবকাঠামোর কাজ শুরু করার এক বছর পর ১৯৯৫ সালের অক্টোবর মাসে সেতুটির মূল অংশ ৪.৮ কিলোমিটার ধরে চূড়ান্ত প্রকল্প অনুমোদিত হয়।যদিও বন্যায় নদী ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হয়ে থাকে, সার্বিক প্রকল্প ব্যয় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক অবস্থায় রাখার জন্য উক্ত সংকোচন অত্যাবশক বিবেচনা করা হয়। এ জন্য অবশ্য নদীর প্রবাহ সেতুর নিচ দিয়ে সীমাবদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে নদী শাসনের প্রয়োজন দেখা দেয়।
সম্ভাব্য দৈব দুর্বিপাক ও ভুমিকম্প যাতে সহ্য করতে পারে সেজন্য সেতুটিকে ৮০-৮৫ মিটার লম্বা এবং ২.৫ ও ৩.১৫ মিটার ব্যাসের ১২১টি ইস্পাতের খুঁটির উপর বসানো হয়েছে। এই খুঁটিগুলি খুবই শক্তিশালী (২৪০টন) হাইড্রোলিক হাতুড়ি দ্বারা বসানো হয়। সেতুটিতে স্প্যানের সংখ্যা ৪৯ এবং ডেক খন্ডের সংখ্যা ১,২৬৩। সেতুটির উপর দিয়ে ৪ লেনের সড়ক এবং ২টি রেলট্র্যাক নেওয়া হয়েছে। সেতুটির উপরিকাঠামো ঢালাই করা খন্ডাংশ দিয়ে তৈরি এবং এগুলি সুস্থিত খিলান পদ্ধতিতে বসানো হয়েছে। সেতুটি নির্মাণে সর্বমোট যে ব্যয় হয় মিলিয়ন ডলারে তার বিভাজন হচ্ছে; সেতু এবং তার উপরে তৈরি পথসমূহ-২৬৯, নদীশাসন-৩২৩, রাস্তা ও বাঁধসমূহ-৭১, উপদেষ্টা- ৩৩, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ -৬৭, সংস্থাপন-১৩, এবং অন্যান্য ১৮৬।
উপমহাদেশের এই অংশের জনগণ সর্বদাই বিশাল যমুনা নদীর উপর দিয়ে সেতু স্থাপনের মাধ্যমে গোটা দেশের সঙ্গে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সমন্বয়ের আকাঙ্খা পোষণ করে এসেছে। ১৯৪৯ সালে জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রথম রাজনৈতিক পর্যায়ে যমুনা সেতু নির্মাণের দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহারে এই সেতু নির্মাণের কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬৪ সালের ৬ জানুয়ারী রংপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুর রহমান যমুনা নদীর উপর সরকারের সেতু নির্মাণের কোন ইচ্ছা আছে কি-না জানতে চেয়ে প্রাদেশিক পরিষদে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। ১৯৬৬ সালের ১১ জুলাই রংপুর থেকে একই পরিষদের আরেকজন সদস্য শামসুল হক এই সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেন এবং এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাজ্যের ফ্রিমান ফক্স অ্যান্ড পার্টনার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটির প্রাথমিক সম্ভাব্যতা নিয়ে সমীক্ষা পরিচালনা করে। তারা সিরাজগঞ্জের নিকট আনুমানিক ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে একটি রেল-কাম-সড়কসেতু নির্মাণের সুপারিশ করেন। এই সমীক্ষা ছিল প্রাথমিক ধরনের এবং তারা বিস্তারিত সমীক্ষা পরিচালনার সুপারিশ করেন। অন্যদিকে ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে বেতার-টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণদানকালে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান তাঁর দলের নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে যমুনা সেতু নির্মাণের কথা উত্থাপন করেন। এ সকল প্রচেষ্টা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মুক্তিযুদ্ধের কারণে বাস্তবায়িত হতে পারে নি। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭২ সালে যমুনা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় এবং ১৯৭২-৭৩ সালের বাজেটে এজন্য বরাদ্দ রাখা হয়। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে জাপান আর্ন্তজাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ১৯৭৩ সালে যমুনা নদীর উপর একটি সড়ক-কাম-রেলসেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা হাতে নেয়। ১৯৭৬ সালে জাপান তাদের সমীক্ষা শেষ করে। তারা বলে যে যমুনা প্রকল্পে ৬৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে এবং এর অর্থনৈতিক আগমের হার মাত্র ২.৬ শতাংশ। যেহেতু এটা প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভজনক নয়, তৎকালীন সরকার প্রকল্পটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ১৯৮২ সালে সরকার যমুনা সেতু প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করে। এ সময় সরকার যমুনার ওপারে পশ্চিমাঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চালনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমীক্ষা দল নিয়োগ করে। সমীক্ষার উপসংহারে বলা হয় যে, শুধু গ্যাস সংযোগ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না। উপদেষ্টাগণ একটি সড়ক-কাম-গ্যাস পরিবাহক সেতুর প্রকৌশলগত সম্ভাব্যতা ও এর ব্যয় নির্ধারণ করেন। এভাবেই বহুমুখী সেতু নির্মাণের প্রাথমিক ধারণার উৎপত্তি হয়। তিন লেন বিশিষ্ট ১২ কিঃ মিঃ দীর্ঘ সেতুর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মন্ত্রিসভা এই রিপোর্ট অনুমোদন করে এবং এই প্রকল্পের অনুকূলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৯৮৫ সারের ৩ জুলাই রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ বলে যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যমুনা সেতু সারচার্জ ও লেভি আদায়ের জন্য আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশটির বিলুপ্তি পর্যন্ত এই প্রক্রিয়ায় ৫.০৮ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ করা হয়। ১৯৮৬ সালে এই সেতুর জন্য প্রথম পর্যায়ের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এ সময় সিরাজগঞ্জ ও ভূয়াপুর (টাঙ্গাইল) মর্ধবর্তী স্থানকে সেতুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান বলে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৮৭ সালের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা পরিচালিত হয়। এতে দেখা যায় যে একটি সড়ক-কাম-রেল-বিদ্যুৎ-গ্যাস লাইন পরিবাহী সেতু অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উভয় দিক থেকেই লাভজনক হবে। ১৯৯২ সালে আইডিএ, এডিবি ও জাপানের ওইসিএফ সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নে সম্মত হয়। নির্মাণ চুক্তির জন্য ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক বিডিং এর মাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হয়। সেতু নির্মাণ, নদী শাসনের কাজ এবং দুটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজের চুক্তি ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে সম্পাদিত হয়। ১৯৯৪ সালের ১০ এপ্রিল সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকল্পের ভৌত নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয় এবং গ্যাস সঞ্চালন লাইন ব্যতীত সকল কাজ ১৯৯৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন সেতুটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়।
ইংরেজ আমলের শেষ দিকে এবং পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তৎকালীন ব্রিটিশ রাজাধানী কলকাতার সাথে মেইল স্টিমারসহ মাল এবং যাত্রীবাহী স্টিমার সার্ভিস চালু ছিল। একপর্যায়ে নাগরপুরের সাথে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে পশ্চিম বঙ্গ কলকাতা থেকে আসেন রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল (ধনাঢ্য ব্যক্তি)।ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তিনি পাকুটিয়ায় জমিদারী শুরু করেন। প্রায় ১৫ একর এলাকা জুড়ে একই নকশার পর পর তিনটি প্যালেস বা অট্টালিকা নির্মাণ করা হয় (১৯১৫)। তখন জমিদার বাড়িটি তিন মহলা বা তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল।
কারুকার্য
প্রতিটি বাড়ীর মাঝ বরাবর মুকুট হিসাবে লতা ও ফুলের অলংকরণে কারুকার্য মন্ডিত পূর্ণাঙ্গ দুই সুন্দরী নারী মূর্তি রয়েছে। এবং প্রতিটি মহলের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য। রেলিং টপ বা কার্নিশের উপর রয়েছে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছোট আকৃতির নারী মূর্তি। এই অট্টালিকা গুলো পাশ্চাত্য শিল্প সংস্কৃতির এক অনন্য সৃষ্টি, যার লতাপাতার চমৎকার কারুকাজ গুলো মুগ্ধ করার মতো। এছাড়া পূজা মন্ডপের শিল্পিত কারুকাজ শতবছর পর এখনও পর্যটককে মুগ্ধ করে।
অনান্য স্থাপনা
তিনটি নাট মন্দির যা তিনটি বাড়ীর সামনে অবস্থিত। দ্বিতল বিশিষ্ট নাচঘরটি মাঠের মাঝখানে রয়েছে। উপেন্দ্র সরোবর নামে বিশাল একটি আট ঘাটলা পুকুর রয়েছে।
বর্তমান অবস্থা
এ সম্পদ অধিগ্রহণের পর এখানে গড়ে তোলা হয় বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ (১৯৬৭)।
অবস্থান
টাংগাইল সদর থেকে ৩৫কিমি. দক্ষিণে নাগরপুর উপজেলার লৌহজং নদীর তীরে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী অবস্থিত।
প্রায় ৫৪ একর জমির উপর শৈল্পিক কারুকার্যমণ্ডিত নাগরপুর চৌধুরীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন যদুনাথ চৌধুরী। কথিত আছে কলকাতার আদলে নাগরপুরকে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এখান থেকেই তিনি জমিদারি পরিচালনা করতেন। রঙ্গমহলের পাশে ছিল সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না ইত্যাদি।
অন্যান্য স্থাপনা
ঝুলন্ত দালান, ঘোড়ার দালান, রংমহল, পরীর দালান
কারুকার্য
অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরের। পাশ্চত্য এবং মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রনে এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই চৌধুরীবাড়ী।
অধিগ্রহণ
দেশ বিভক্তির পর তদানিন্তন সরকার চৌধুরীবাড়ীর সকল সম্পদ অধিগ্রহণ করে (১৯৪৭)।
বর্তমান অবস্থা
নাগরপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজটি চৌধুরীবাড়ীর মুল ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।চৌধুরীবাড়ীর দক্ষিণে ১১ একর জমির ওপর একটি বিরাট দিঘি রয়েছে, এটি উপেন্দ্র সরোবর নামে পরিচিত।
অবস্থান
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় এ চৌধুরী বাড়ী অবস্থিত। টাঙ্গাইল থেকে সিএনজি যোগে এখানে পৌঁছানো যায়।
নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর প্রথম পুরুষ শাহ আতিকুল্লাহ, বাগদাদ হতে দিল্লীতে আসেন । তৎকালীন দিল্লীর বাদশাহ তার কাছে মুরীদ হন এবং তৎকালীন পূর্ব বাংলায় বসবাসের জন্য জায়গীর প্রদান করেন। প্রথমে তিনি পাবনা জেলার নাকালিয়াতে বসবাস করতে থাকেন। পরবর্তী বংশধরগণ নাকালিয়া হতে ঢাকা জেলার হাসমিলানে চলে আসেন। শাহ আতিকুল্লাহ‘র অধস্তন বংশধর শাহ সৈয়দ খোদাবখশ। তার এক ছেলে সৈয়দ মোহাম্মদ শাহ, এক মেয়ে সাইয়িদা তালিবুন নেছা চৌধুরানী। পাঠানদের পতনের যুগে তুর্কীদের জমিদারী ছিল ধনবাড়ীতে। এ বংশের উত্তর পুরুষ ছিলেন রাজা আলী খাঁ সাহেব।
বংশাই ও বৈরান নদীর মাঝখানে অপূর্ব নৈসর্গিক প্রকৃতির মাঝে এ বাড়ির অবস্থান। চন্দ্র বংশীয় রাজা যশোধর সাবেক পুখুরিয়া (বর্তমানে ধনবাড়ি এই পরগণার অন্তর্গত ছিলো) শাসক ছিলেন মোগল আমলে। তার সেনাপতি ছিলেন গৌড়ের সুলতানের ওমরাহ ধনুয়ার খাঁ। তিনি কৌশলে রাজ্যটি দখল করে পুত্র ইস্পিঞ্জার খাঁকে দিয়েছিলেন।
এই ইস্পিঞ্জার খাঁ ও তার ভ্রাতা মনোয়ার খাঁ ধনবাড়িতে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন অবশ্য জমিদারি প্রতিষ্ঠা নিয়ে অন্য মতবাদও রয়েছে। ধনবাড়ি জমিদার বাড়ির প্রধান আবাস ভবন, কাঁচারি ভবন, তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি মসজিদ ও কবরস্থান সমন্বয়ে পরিকল্পিত। প্রধান আবাস ভবনটি একটি বেষ্টনি প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত। এর অভ্যন্তরে রয়েছে প্রশস্ত একটি বাগিচা। ধারণা করা হয় ইস্পিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ ছিলেন ধনবাড়ি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মসজিদটি ধনবাড়ি নবাব মঞ্জিলের বাইরে দিঘির পাড়ে অবস্থিত।