এক গ্রামে দুই ছেলের মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল,যদিও তারা বয়সে বেশ ছোট বড় ছিল।
একজনের বয়েস ১০ অন্যজনের ৬বছর, খুবই ভালো দোস্তি ছিল তাদের মধ্যে,যা করত সব একসাথে করত,যা খেত দুজন ভাগ করে মিলে খেত।
একদিন দুইজন খেলতে খেলতে গ্রামের বাইরে চলে গেলো,ছোটাছুটির এক পর্যায়ে ১০ বছরের বাচ্চাটি এক কুয়ার মধ্যে পড়ে গেল।সে অনেক চিৎকার করতে লাগল,এদিকে ছোট ৬ বছরের বাচ্চা কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা,আশে পাশে কোন লোকজন ও নেই যে কারো কাছে সাহায্য চাইবে।
খুজতে খুজতে একটা রশিবাধা বালতি দেখতে পেল,দ্রুত তা নিচে ফেলল আর বন্ধুকে বলল বালতি ধরে উপরে উঠে আয়।
আর সে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে রশি টানতে লাগলো,সে ততক্ষন রশি ছাড়লো না যতক্ষন তার বন্ধুটি উপরে উঠে না এলো।
এবার দুজনেই খুব খুশি একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগল,আজ যদি সে না উঠতে পারত তো কি হতো।
যাইহোক কাহিনি এখানেই শেষ নয়,তারা এবার চিন্তা করছে গ্রামে গিয়ে যদি সব বলি তবে মাইর খেতে হবে।এত বড় বিপদের কথা না বললেও নয়।
গ্রামে গিয়ে ১০ বছরের বাচ্চা টা সবাইকে বলে দিলো এই এই ঘটনা আজ ঘটেছে,কিন্তু কেউ বিশ্বাস করলো না,অবশ্য বিশ্বাস না করার কারন হলো ৬ বছরের বাচ্চাটির গায়ে এত জোর ছিলনা যে এক বালতি পানি ভরে এখান থেকে ওখানে সে নিতে পারবে।
কিন্তু একজন বয়স্ক ব্যাক্তি তাদের কথা বিশ্বাস করলো,গ্রামের বাকি লোক তার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে জিগ্যেস করলো আপনি বলেন এটা কিভাবে সম্ভব?
বয়স্ক ব্যাক্তি হেসে দিয়ে বললো,আমি কি বলব,বাচ্চারা তো বলছেই যে কিভাবে বাচাইছে,রশিওয়ালা বালতি ফেলেছে রশি ধরে টেনে অপর বাচ্চাটিকে টেনে তুলে এনেছে ব্যাস
গ্রামের সবাই অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো,কিছুক্ষন পর বয়স্ক লোকটি বলল প্রশ্ন এটা নয় এই ছোট বাচ্চা এই কাজ কিভাবে করতে পারল?
প্রশ্ন হলো এটা যে সে কেন করতে পারলো?
আর এর একমাত্র উত্তর হলো,তার আশে পাশে এমন কেউ ছিলনা যে বলবে,তুই এটা পারবি না,তোর দ্বারা এটা সম্ভব নয়।এমন কি তার বন্ধু এবং সে নিজেকেও এসব বলার সময় পায়নি যে আমি কি এটা পারব কিনা?
শুধুমাত্র এই কারনেই সে অসম্ভব কে সম্ভব করতে পেরেছে।
আপনি কি পারবেন তা আপনার শক্তি,যোগ্যতায় নির্ভর করেনা,নির্ভর করে আপনার ইচ্ছে শক্তি ও চেষ্টায়।
প্রকৃতির রাণী খাগড়াছড়ি জেলার সন্তান আমি মুসাফির জসীম নাম আমার বাবা একজন কৃষক নাম আব্দুর রশিদ আমার বয়স 23 পরিবারের 2য় সন্তান, আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ।
জন্মস্থান, জেলা খাগড়াছড়ি দিঘীনালা উপজেলার 1নং মেরুং ইউনিয়ন 4 নং ওয়ার্ডে বাঁচা মেরুং এলাকায় ।
আমার জন্ম পড়াশুনা, 7ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে আর পড়াশোনা শেষ করতে পারিনি বর্তমান অবস্থান: এখন পড়াশোনা অফ, চলাফেরা ও কষ্ট আমার ব্যবসার শুরু টা এতোটা কঠিন ও ছিল না অনেক টা সহজেই ছিল। আমি তো অসুস্থতার জন্য সারাদিন বসে ই থাকতাম তাই এক আপুর অনুপ্রেরণায় ব্যবসাটা শুরু করছিলাম সেই থেকেই শুরু।
আমি সকল প্রতিবন্ধকতা জয় করে কিছু করার প্রচেষ্টা থেকে ই শুরু করছিলাম শাড়ি, খাদি পাঞ্জাবি, থ্রি পিস, উলের শাল, খাঁটি ঘি,ড্রাই ফ্রুটস, লোগো ডিজাইন নিয়ে মূলত আমার কাজ দেশীয় পণ্য র প্রতি বুকে ভালোবাসা ধারন করে এগিয়ে যেতে চাই আমার কাজ নিয়ে। যখন আমি ঘরে বসে বসে হাঁফিয়ে উঠি, কিছু করতাম না খুব ই খারাপ লাগতো, নিজের খরচের জন্য ও বাবার কাছে হাত পাততে হতো ।
১৮ ই অক্টোবর ২০২০ যখন এক ভাই women and e-commerce forum (we) জয়েন করে দেয় তখন উইতে জয়েন হয়ে দেখি দেশীয় পণ্য র জয়জয়কার ধ্বনি। দেশের টাকা দেশে ই রাখছে দেশীয় পণ্য র উদ্দোক্তারা দেশীয় পণ্য র ভালোবাসা থেকেই আমি দেশীয় পোশাক নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই আমার ব্যবসার শুরুটা অনলাইন ছিল কেন্দ্রিক ই আগামী তে অফলাইনে ও বড় করার চিন্তা আছে ইনশাআল্লাহ কাজ করতে গিয়ে আমি কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি বরং সবার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি সবাই আমাকে সাহস যুগিয়েছে।
আমি প্রতিবন্ধকতা জয় করে কিছু করার চেষ্টা করছি দেখে সবাই আমাকে নিজেদের অনুপ্রেরণা ভাবে নতুন উদ্যোক্তা যারা এই পেশায় আসতে চায় একজন উদ্দোক্তা হতে চায় তাদের প্রতি আমার এই পরামর্শই থাকবে যদি আপনি কিছু করতে চান তাহলে মন থেকে নিজের ভালোলাগা ভালোবাসা থেকে কাজ করবেন। আপনি যে পণ্য নিয়ে কাজ করতে চান সেই পন্যে আগে পড়াশোনা করবেন পণ্য সম্পর্কে নিজে জানুন এবং অন্যকে জানানোর চেষ্টা করবেন
এরজন্য পড়াশোনা র বিকল্প নাই। আর এই আত্মবিশ্বাস রাখবেন এই কাজে আমি সফলতা অর্জন করব ই উদ্যোক্তা জীবনে সফল হতে মা বাবার দোয়া কিছু মানুষের অনুপ্রেরণায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল, যারা আমাকে নিজেদের অনুপ্রেরণা মনে করে ব্যবসায় টাই আমার রুটিরুজি তাই ব্যবসা নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ ভাবনা পরিকল্পনা অনেক বড়।
আমার একটা পরিকল্পনা অনলাইন থেকে অফলাইনে আমার ব্যবসাটাকে নিতে চাই একটা শোরুম করতে চাই ভবিষ্যতে । উদ্যোক্তা জীবনের শুরু আমার এক বছর হতে চলল এই এক বছরে আমি প্রায়ই ৯০/১০০ টা কাস্টমার পেয়েছি, রিভিউ পেয়েছি ২০টার মতন। মোট বিক্রি প্রায় ১০০০০০ নামঃ Musafir Jasim উদ্যোগের নামঃ Musafir shop মোবাইল নাম্বারঃ 01886296868 ইমেইল এড্রেসঃ ju701434@gmail.com
আমার নাম নুসরাত জাহান। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আমি পরিবারের ২য় সন্তান। আমার একজন বড় বোন ও একজন ছোট বোন আছে। আমার বাবা সেনাসদস্য (অবসবরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট) ছিলেন। তিনি মারা গেছেন ২বছর আগে। আমার মা গৃহিনী। আমার জন্ম টাংগাইল জেলায় এবং জন্মের পর থেকেই আমি টাংগাইলেই বড় হয়েছি।
আমার ব্যবসার শুরুটা কি সহজ ছিল? হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ সহজই ছিল শুরুর দিকটা। আমার ক্ষেত্রে এমন হয়নি যে টাকার অভাবে, বা কোনো প্রয়োজনের তাগিদে ব্যবসা করছি বা বাধ্য হয়েছি ব্যবসা করতে হচ্ছে,পরিবারের অভাব আছে তাই করতে হবে এমন কোনো বিষয় না, আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো অবস্থায় আছি। কিন্তু আমি চাইতাম নিজে থেকে কিছু করতে যাতে নিজের চাহিদা টুকু নিজে কিছু হলেও পূরণ করতে পারি৷ চাহিদার সব কিছুর জন্যই মা-বাবার উপর নির্ভর থাকতে না হয়।
আলহামদুলিল্লাহ এখন আমি আমার বেশিরভাগ চাহিদা নিজেই পূরণ করতে পারি।আমি ব্যবসা শুরু করেছি মূলত নিজের সময় কাটানোর জন্য এবং নিযেকে ব্যস্ত রাখার জন্য। করোনার কারণে যখন হঠাতই স্কুল কলেজ বন্ধ, ধরতে গেলে সারা বাংলাদেশই বন্ধ তখন ঘরে বসে বসে যেন সময় কাটছিল না। তাই চাচ্ছিলাম যেহেতু এখন পড়াশোনাও বেশি নেই, তাই পড়াশোনার পাশাপাশি সময়টাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। সেক্ষেত্রে যেহেতু সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমের সাথে সংযুক্ত আছি, সবাইকে দেখছি অনলাইনের মাধ্যমেও কিছু না কিছু করা যায় তখন আমি ভাবলাম আমিও কিছু একটা শুরু করি। এইক্ষেত্রে হ্যান্ড পেইন্ট কাজটা আমার খুবই ভালো লাগত, আর আকাঁআঁকি আমিও পছন্দ করি তাই হ্যান্ড পেইন্ট এর কাজ করার উদ্যোগ নিলাম।
এইক্ষেত্রে আমি রং তৈরি করার প্রাথমিক নিয়মগুলো আগে থেকেই জানতাম আর বাকি যেসব জিনিস প্রয়োজন সেগুলো ইউটিউব দেখে শিখে কাজ শুরু করেছি৷ আর আমার এই কাজের প্রথম মূলধন ছিল ৬০০০ টাকা। যা আমার ছোটবোনের ব্যাংকে জমানো টাকা ছিল। আমি হ্যান্ড পেইন্ট এর শাড়ি, পাঞ্জাবি, কাপল সেট, ফ্যামিলি সেট, থ্রিপিস এইসব নিয়ে কাজ করি।
আমি যখন ভেবেছিলাম যে কিছু একটা করি, তখনই ঠিক করেছিলাম এমন একটা জিনিস দিয়ে শুরু করব যাতে আমার প্রতিভা টুকু সবার মাঝে প্রকাশ পায়। রেডিমেইড জিনিস নিয়ে তো মানুষ কাজ করেই, যা নিজে তৈরি করে না। তাই আমি নিজের প্রতিভা প্রকাশের জন্য এই কাজটি বেছে নিয়েছি৷ সবার থেকে ভিন্ন কিছু নিজের মতো করে চেষ্টা করেছি। এখন অনেকে হয়তো হ্যান্ড পেইন্ট এর কাজ করে,অনেকের কাজ আমার কাজের চেয়ে অনেক ভালো, তারা পারদর্শী,দক্ষ কিন্তু আমি যতটুক পারি তার সর্বোচ্চ দিতে চেষ্টা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমার এই কাজ নিয়েই অনেকের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছি। অনেকের মাঝে বিলিয়ে দিতে পেরেছি এবং অনেকে আমার কাজকে অনেক পছন্দও করে। আমার ব্যাবসার শুরুটা অনলাইনেই শুরু।
এর পর ধীরে ধীরে অফলাইনেও মানে আমার প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয় স্বজন রাও আমার করা জিনিসের প্রতি আগ্রহী হয়ে তারা আমার ক্রেতা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমি গত ৯-১০ মাস যাবত কাজ করছি।কাজ করতে গিয়ে কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি বললেই চলে আলহামদুলিল্লাহ। অর্ডার ক্যান্সেল,পণ্য ফেরত, দোষ ত্রুটি,পেমেন্ট এসব পরিস্থিতির মুখোমুখি এখন পর্যন্ত হইনি। নতুন উদ্যোক্তারা এই পেশায় আসতে চাইলে, তাদের জন্য আমার পরামর্শ কি থাকবে-অবশ্যই তারা এই পেশায় আসতে পারে, ঘরে বসেই নিজের সুপ্ত প্রতিভা অন্যের মাঝে প্রকাশ করার আনন্দই আলাদা। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে মানুষ অনলাইনে কেনাকাটাইবেশি সুবিধা মনে করে৷ আর তারা চায় ইউনিক কিছু যা সবার নজর কাড়ে এমন জিনিস।
তাই যারা নতুন এই পেশা নিতে চান তারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন সবার থেকে ইউনিক কিছু চেষ্টা করার যাতে সবার নজর কাড়ে এবং তাতে আপনার সুপ্ত প্রতিভা প্রকাশ পায়। ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারলেই সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ। অনেকে ধৈর্য হারা হয়ে যায় যে সবাই তো বললো অনেক বেচাকেনা হয় এখন তো হচ্ছে না তাহলে বাদ দিয়ে দেই বা অন্য কিছু নিয়ে চেষ্টা করি তখন তারা একাধিক পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করে তারপর আর কোনোটায় সামলে উঠতে পারে না। তাই প্রথমেই লাভের আশা না করে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে, পরিচিতি বাড়াতে হবে এবং নিজের কাজের কোয়ালিটি প্রতিনিয়ত সুন্দর করার চেষ্টা করতে হবে যাতে সবার নজর আকর্ষন করে। উদ্যোক্তা জিবনে সফল হতে যাদের ভূমিকা বেশি ছিল- আমার উদ্যোক্তা জীবনে আমার মা, বোন পরিবারের সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা আমাকে জোড় করেছে কিছু একটা করার জন্য তা না।
আমি যখন চিন্তা করলাম এইধরনের কিছু আমি শুরু করতে চাচ্ছি তখন তারা আমাকে বাধা দেয়নি, কাজে সাহায্য সহযোগিতা করেছে৷আমার বড় আপু এখন আমার অনেক কাজ করে দিয়েছে, অনলাইনে প্রচারের ক্ষেত্রে, অনেকের মাঝে জানানোর ক্ষেত্রে সে আমাকে সাহায্য করেছে।। এখন এই ব্যবসা আমি আর আমার আপু ২জন মিলেই করি। এছাড়াও আমার মা, ছোট বোন কখনো এর বিপক্ষে ছিল না,পড়াশোনার পাশাপাশি যদি আমি নিজে কিছু একটা করি তাতে তারা বাধা দেয় নি তারা আমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট আলহামদুলিল্লাহ । বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ব্যবসা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও দূর আগাতে চাই আমার পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা চালিয়ে যেতে চাই৷ একজন সফল উদ্যোক্তা, একজন সফল ব্যবসায়ী হতে চাই।
আমি বিশ্বাস করি প্রবল ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য আর সততার সাথে কোনো কাজ করলে সেই কাজে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ। আমার উদ্যোগের সফলতা-আলহামদুলিল্লাহ গত ৯-১০ মাস যাবত আমি এই উদ্যোগ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে ভালো সাড়া পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমি দেশের ৭-৮ টি জেলায় আমার পণ্য পাঠিয়েছি। এমনি কোনো কোনো জেলায় একাধিক বার, ৪-৫ বারও আমার পণ্য পাঠিয়েছি। আর যেহেতু আমার হোম ডিস্ট্রিক্ট টাংগাইল তাই টাংগাইলের বিভিন্ন জায়গায় আমার পণ্য দিয়েছি। আমার বেশ কিছু রিপিট কাস্টমার আছে যারা একাধিক বার আমার কাছ থেকে পণ্য নিয়েছেন এবং তারা আমার পণ্য নিয়ে সন্তুষ্ট আলহামদুলিল্লাহ। আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু ৯-১০ মাস। আর যেখানে আমি ৬০০০টাকা নিয়ে শুরু করেছিলাম সেখানে আজ আমি ৭৫-৮০ হাজার টাকায় পৌছেছি। সবার দোয়া এং ভালোবাসায় খুব দ্রুতই লাখপতিদের খাতায় লাম লিখাবো ইনশাআল্লাহ ।
আগে আমরা পরতাম ভাতে মাছে বাংগালী কিন্তু আজকের যুগে এসে আমরা হয়ে গেছি ভর্তা ডালে বাংগালী। আলু ভর্তা আর ডাল হলে আর কি লাগে বলেন,আমার তো আর কিছু দরকারই নেই।
যাই হোক নতুন জাতের এই আমেরিকান জাতের এই আলু যে খেয়েছে সত্যি সেই এর প্রেমে পড়ে গিয়েছে বিশেষ করে এই আলু ভর্তা অন্য আলুর চেয়ে অনেক বেশি স্বাদের। অন্যান্য এলাকায় বেশ আগে থেকে এই আলু পাওয়া গেলেও আমাদের টাংগাইলে বেশ ক বছর ধরে দেখা মিলছে, পরিক্ষামুলক ভাবে চাষ করে জানা যায় এই আলুর ফলন ও অন্য আলুর চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে,শতাংশে প্রায় দুইমন করেও নাকি আলু তারা উঠিয়েছেন,বাজারেও এর চাহিদা অন্য আলুর চেয়ে অনেক বেশি।
দেখতে জামের মতই আকারে একটু লম্বা, এটি সিদ্ধ করলে ভেতরে লাল হয়ে যায়,যেমন টা জামের ভিতরে হয়,হয়ত এই কারনেই এই আলুকে জাম আলু কয় তবে জাম খেলে দাতের রঙ বদলালেও এই আলু খেলে কিন্তু বদলায় না।
যারা খাননি এই জাম আলু তাদের প্রতি রিকোয়েস্ট থাকবে একবার খেয়ে দেখবেন।একদম ভরতা ভাতের বাংগালী হয়ে যাবেন। যেহেতু এই আলুর ফলন ভালো,এর উপকারিতাও অন্য আলুর চেয়ে বেশি,বাজারে এর চাহিদা ও মুল্য অন্য আলুর চেয়ে বেশি তাই এটা হতে পারে আপনার উদ্যোগের একটি পণ্য,যা বেচে হয়ে যেতে পারেন আপনি ধন্য,অপর দিকে কাস্টমারও খুশি পেয়ে খাটি পণ্য।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় যে এই আলুর উৎপাদনের উপর একটা প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের এসব নতুন নতুন ফলস উৎপাদনে আগ্রহি করার চেষ্টা চলছে অনবরত।
সত্যি আমাদের টাংগাইলে এত এত সোনার খনি আছে যে আমরা যদি এগুলো ই কমার্সে নিয়ে আসতে পারি তবে সত্যি ভাল কিছুই সম্ভব।।
মাল্টা আঙুর,আপেল কমলা আর মাল্টা এগুলোর নাম এলেই কেমন যেন ফরেন ফরেন একটা ভাব আসে না?আসলে এই ফরেন ফল গুলো ভালো হলেও আমাদের ভোক্তাদের কাছে পৌছাতে পৌছাতে এগুলো আর ভালো থাকেনা,আর কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী ব্যাবসার জন্য অনেক রকম ক্যামিকেল মিশিয়ে আমাদের কাছে তরতাজা দেখিয়ে বিক্রি করেন আর আমরা সেগুলো খেয়ে শক্তি পাওয়া তো দুরের আরও রোগা হয়ে যাই।
এক গবেষণায় দেখা গেছে আপেলের চেয়ে অনেক গুন বেশি ভিটামিন আছে আমাদের দেশি পেয়ারাতে। যাইহোক মাল্টা এখন আমাদের দেশেই চাষ হচ্ছে এবং তার ফিডব্যাকও বেশ ভালো আসছে,স্বাদে মানে সেরা।টাংগাইলের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমানে মাল্টার চাষ শুরু হয়েছে।
দেশী মাল্টা মানে ই যে টক মাল্টা তা কিন্তু এখনকার তথ্যমতে ভিত্তিহীন।। জাম্বুরা এবং কমলা র সংকরায়ন এর ফলে বারি মাল্টা ১ উদ্ভাবন হয়েছে যা আমাদের দেশের ও বিভিন্ন জায়গায় চাষ হচ্ছে মাল্টা এবং তা সুমিষ্ট। সাইট্রাস জাতীয় এক ধরণের ফল হলো।মাল্টা। বাংলাদেশে মাল্টার এত চাহিদা যে বিশ্বে মোট মাল্টা আমদানীকৃত দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম এবং আমাদের দেশে বিদেশী ফলের মাঝে সবথেকে বেশি আমদানি হয় আপেল এবং এর পর ই রয়েছে মাল্টার অবস্থান। গত অর্থবছরে মাল্টা আমদানী হয়েছে ১৯ কোটি ৯১ লাখ কেজি মাল্টা।।এই তথ্য থেকেই আন্দাজ করা যায় মাল্টার চাহিদা কি পরিমান আমাদের দেশে। এই ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন ফলটির অভিযোজন ক্ষমতা কমলা র থেকে ও বেশি তাই এটি এখন সহজে ই চাষ করা হচ্ছে আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
অপেক্ষাকৃত উঁচু মাটি যেখানে পানি জমেনা এমন জায়গা মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। এবং এসব বিবেচণায় টাংগাইল এর ঘাটাইল এর মাটি মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী বিবেচিত হয়েছে এবং এখানে শুরু হয়েছে বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টার চাষ এবং শুধু তাই নয় পাওয়া যাচ্ছে মাল্টার বাম্পার ফলন ও। ঘাটাইল জেলার উত্তর সীমান্তে রসুলপুর গ্রামে মাল্টার বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয় শামসুল আলম নামক একজন ব্যক্তি কে দিয়ে, যিনি ছিলেন পেশায় একজন শিক্ষক। তার হাত ধরে সেই কয়েক বছর আগে ই শুরু হয় ৭ একর জমিতে মালটা ফলের বাগান, কিন্তু এখন আর তা এটুকুতে সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পরেছে অনেক গ্রামে। এখন ঘাটাইল সদর উপজেলাসহ, শালিয়াবহ, মধুপুর এর বেতবাড়ি গ্রাম সহ সখীপুরের কয়েকটি গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে মাল্টার।
২ হেক্টর এর বেশি জায়গা জুড়ে শুধু মাল্টার চাষ হচ্ছে। চারা গাছ লাগানোর পর থেকে ৩ বছর এর মত সময় লাগে। অনেক সময় ২য় বছরেই ফল আসে কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক গাছ হওয়ার আগের ফল পরিপক্ক না করা ই ভালো গাছের জন্য এবং পরিবর্তী ফলন এর জন্য৷ জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি তে ফুল আসলে সেই ফুল থেকে ফল পর্যন্ত সময় লাগে প্রায় ৭-৮ মাস। পূর্ণ বয়স্ক একটি গাছে ৩০০ টি র কাছাকাছি বা বেশি মাল্টা ধরে৷
বিভিন্ন ধরণের বিদেশী ফলের ভীড়ে ক্রেতারা এখন অনেক বেশি সচেতনতায় ঝুকছেন দেশীয় ফলের প্রতি। স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে আমাদের দেশি ফলের সাথে বিদেশী ফলের তুলনা হয়না। তাছাড়া মাল্টা সব সময় ই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী । আর তা যদি হয় দেশের মাটিতে কেমিক্যাল ফ্রি তাহলে অবশ্যই এর সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশিই তাই না।
আসুন জেনে নেয়া যাক মাল্টার কিছু গুনাগুনঃ মাল্টাতে রয়েছে ভিটামিন বি, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, চর্বিমুক্ত ক্যালরি, যা আমাদের দেহের জন্য অনেক বেশি পুষ্টির জোগান দেয়। এক গ্লাস মাল্টার জুস ভিটামিন সি এর এত ভালো উৎস যে তা ভিটামিন সি ট্যাবলেট এর বিকল্প পুষ্টির জোগান দিতে পারে। মাল্টা পাকস্থলী কে পরিষ্কার রাখে যার ফলে আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। মাল্টায় আছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড়, দাঁত গঠনে সহায়তা করে। মাল্টায় অবস্থিত ভিটামিন সি আমাদের কোলন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মাল্টায় দ্রুত হজমে সহায়তা করে এবং জন্ডিস এর জন্য খুব উপকারী। মাল্টায় উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সর্দি, জ্বর ভাব, ঠান্ডা, হাঁচি, কাশিতে খুব উপকারী ফল মাল্টা। গুরা থেকে বুরাঅর্থাৎ বাচ্চা থেকে বয়স্ক সব বয়সের লোকেদের পছন্দের ফল হলো মাল্টা। বাড়ির পাশে কিংবা বাড়ির উঠোনেও শুরু করতে পারেন এই মাল্টার চাষ।মাল্টা বিভিন্ন বাগান থেকে কালেক্ট করেও শুরু করতে পারেন অনলাইনে ব্যবসায়।
আনারস আহা নাম শুনেই যেন জিভে জল আসে টস টসআমি তো মনে করি এটি সব ফলের বস!
আনারসের রাজধানী বলা যায়া মধুপুর কে ,আনারসে মধুর স্বাদ লেগে থাকে মুখে মুখে
দক্ষিণ আমেরিকায় এই গুচ্ছ ফল আনারসের আদি জন্মস্থান। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও কোস্টারিকা, ব্রাজিল এবং ফিলিপাইন এই তিনটি দেশ একত্রে বিশ্বের সমগ্র আনারস উৎপাদনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ উৎপাদন করে থাকে। ২০১৮ সালে সারাবিশ্বে আনারসের উৎপাদন ছিলো ২৭৯ লক্ষ টন। সবথেকে বেশি উৎপাদন করেছিলো কোস্টারিকা। এরপর বৃহত্তর উৎপাদক হিসেবে যথাক্রমে ফিলিপাইন, ব্রাজিল ও থাইল্যান্ড।
টাংগাইলের মধুপুরের মাটি বেলে দো-আশ এবং পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় পানি জমে থাকে না, যার ফলে এটি আনারস চাষের উপযোগী। মধুপুরের অধিকাংশ এলাকা জুড়েই হয় আনারসের চাষ। শ্রাবণের শেষ অবধি যেনো বাতাসে উড়ে বেড়ায় পাকা আনারসের ঘ্রাণ। এই মিষ্টি ঘ্রাণের কারণে বন্য প্রাণী ও পাখির যেনো ঈদ চলে পুরো মৌসুম জুড়ে। প্রতি বাড়িতে চলে আনারসের আচার বানানোর আনন্দ । সেই সাথে মধুপুরের জলছত্র বাজারে বসে সবথেকে বড় বাজার। যেখানে উপজেলার অরণখোলা, আউশনাড়া, শোলাকুড়ি, পচিশ মাইল থেকে জলছত্র বাজারে আনারস আসে, জলছত্র বাজারকে বলা হয় আনারসের রাজধানী।
আনারসের হাট নিয়ে একটা প্রামাণ্য চিত্র ধারন করার প্ল্যান চলছে শিগ্রই ইউটিউবে দেখতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।আওয়ার টাংগাইল ইউটিউব চ্যানেলে। ভরা মৌসুমে এখানে দেখা যায় চারদিকে আনারসের ছড়াছড়ি,কবির সেই লাইনের কথা মনে পড়ে যায় এখানটায় এলে,ঠাই নাই ঠাই নাই ছোট এ তরী,আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি,সেরকম, ঠাই নাই ঠাই ছোট সাইকেল কিংবা ভ্যানগাড়ি জুড়ি ,মিষ্টিআনারসে যেন গিয়েছে ভরি
যেহেতু এখানে প্রচুর আনারস উৎপাদিত হয় তাই এখানকার চাষিরা নতুন নতুন জাতের আনারস পরিক্ষামুলক ভাবেও চাষ করছেন।তারমধ্যে একটি জাত হচ্ছে জলডুগি আনারস। যা সাইজে একটু ছোট তবে অনেক মিষ্টি ও অন্য আনারসের থেকে কম সময়ে ফলন দেয়। এবছর মধুপুরে ছয় হাজার তিনশত আটা নব্বই হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ১৩৪ মেট্রিকটন আনারস। সংখ্যার দিক থেকে যা ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টিরও বেশি। মধুপুরে আনারস চাষির সংখ্যা হচ্ছে ১৩ হাজার ৭৫০ জন। এছাড়াও নিজ আঙ্গিনার আশেপাশের জমিতেও কম বেশি চাষ করছেন প্রায় সব পরিবারের মানুষই।
বর্তমানে চাষিরা নিজেদের খরচ কমাতে আনারসের ব্যাবহার করছে হরমোন। যার কারণে আনারসের আগের মধুর ঘ্রাণ টা কমে যাচ্ছে, সাথে হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন আসল স্বাদটাও। চাষীরা জানান, আনারস গাছে ফল আসতে ১৫-১৬ মাস সময় নিয়ে নেয় যা পরিপক্ক হতে প্রায় ২১-২২ মাস সময়। এতোদিনে আমাদের অনেক বেশি খরচ হয়ে যায়। কাঠাল, আম,কলা,লিচু, জাম, পেপে সহ অনেক ফল যেখানে ১২ মাসেই প্রফিট এনে দিচ্ছে, সেখানে আনারস চাষের সময়টা একটু বেশিই হয়ে যায়।।তারপরেও যতটা আশা নিয়ে আমরা ২ বছর অপেক্ষা করি ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় অনেকেই আনারস চাষের আগ্রহ হারাচ্ছে, আবার কেউ কেউ নানা রকম ক্যামিকেল ও হরমোন দিয়ে পাকিয়ে অসময়ে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে।
সরকার যদি আমাদের দিকে একটু মুখ তুলে তাকান এবং আমাদের কিছু সুযোগ সুবিধা করে দেব তাহলে আগের মতই অকৃত্রিম স্বাদের আনারস আমরা দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।
আনারস চাষে কিছু পরিবর্তন এনে বেশ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে- আনারস বিক্রি হাট নির্ভর না হয়ে ই কমার্সের মাধ্যমে সারা দেশে বিক্রি করলে ভালো প্রফিট করা যেতে পারে। আনারসের পাতা থেকে সুতা তৈরি করা যায় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা যেতে পারে এবং তা থেকে ভালো কিছু আশা করাই যায়। জুস ফ্যাক্টরি তৈরি করা যেতে পারে,যেহেতু কাচামালের প্রচুর আছে এখানে তাই একটা নয় কয়েক্টা জুস ফ্যাক্টরি এখানে করা যেতে পারে। জ্বালানিতেও বেশ ভুমিকা পালন করে আনারসের গাছ ও পাতা। আনারস বাগানে পেপে, আদা, হলুদ চাষ করে আয় ও উতপাদন বাড়ানো যেতে পারে। আনারসকে আবার ব্যবহার করা যায় সবজি হিসেবেও। যেমন কচি আনারসকে রান্না ও ভাজি করে খাওয়া যায়। আনারসের আচার ও অনেক বেশি জনপ্রিয়।
আসুন যেনে নেই আনারসের কিছু উপকারিতাঃ আনারসের অনেক ঔষধি গুনাগুন ও রয়েছে। যেমন জ্বর এসেছে মানেই আনারস খেলে ভালো হবে এ কথা কিন্তু মানুষ এমনি এমনিই বলে না, উপকারী তো অবশ্যই। আনারসের জুস ওজন কমাতে সাহায্য করে কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে মজবুত করে। আনারসের ক্যালসিয়াম দাতেঁর সুরক্ষায় করে। মাড়ির যেকোন সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর। চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় – বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতি দিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়াও হজম শক্তি বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে।
আপনি জানেন কি কফি এখন টাংগাইলেও উৎপাদিত হচ্ছে? কফির নাম এলেই মনের মধ্যে গুন গুন করে বেজে সেই গান,কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেইব্যাক্তিগত ভাবে আমি চায়ের চেয়ে কফি বেশি পছন্দ করি। এক সনয় ছিল যখন চা কফি শুধু বিশেষ কোন জায়গায় ব্যবহৃত হতো,যেমন অফিস,মিটিং, রেস্টুরেন্টে আড্ডা,বা কোন অনুষ্ঠান। আজকাল চা কফি ছাড়া যেন আমাদের জীবনই পানছে,ঘুম থেকে উঠে চা কফি না খেলে তো আজকাল অনেকের ঘুমই ছাড়েনা,আবার অনেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও এই চা কফি খেতে হয়।
এক গবেষণার প্রমান মিলে,বিশ্বের ২য় পানিয় হলো কফি,এটির ব্যাবহার অন্যান্য দেশে অনেক আগে থেকেই ছিল বাংলাদেশেও এখন এর চাহিদা প্রচুর পরিমানে। আমাদের দেশে এর প্রচলন খুব বেশিদিন হবে না। তারপরেও এতোটা জনপ্রিয় হয়েছে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে তা চিন্তার বাইরে। মূলত ইউরোপ,আমেরিকার দেশগুলোতে রয়েছে এর বেশ প্রচলন। তবে জানা যায় নবম শতকে ইথিওপিয়াতেই এর সূত্রপাত ঘটে। ফালদি নামক এক ছাগল পালকের মাধ্যমে। তিনি একসময় দেখেন যে তার ছাগলগুলো বেরিজাতীয় একপ্রকার গাছের ফল খেয়ে অদ্ভুত আচরণ করে এবং সারা রাত না ঘুমানোর একটি ইতিহাস গড়ে। এরপর ছাগল পালক এই বীজ নিয়ে একজন মুসল্লির কাছে যায় তিনি এটি পুড়িয়ে দেখেন যে এর গন্ধ আরো মাতোয়ারা করে দেয়। একসময় বীজগুলো গরমপানিতে সিদ্ধ করার ফলে দেখেন যে এটির যেমন সুঘ্রান তেমনি খেলেও শান্তি শান্তি একটি ভাব চলে আসে। সেই থেকে শুরু এর প্রচলন,আবিষ্কার হয় জনপ্রিয় পানিয় কফির। আঠারো উনিশ শতকের দিকে সবচেয়ে বেশি এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে কয়েকটি দেশে।এটি আমাদের দেশে এসেছে এটি প্বার্শবর্তী দেশ ভারত থেকে।
পার্বত্য অঞ্চল বান্দরবানের কেউ একজন ভারত থেকে চারা নিয়ে এসে এখানে চাষাবাস শুরু করেন। প্রথম দিকে তেমন ফলন ভালো না হলেও পরবর্তীতে বেশ সাড়া ফেলে। আর এখান থেকেই এখন পার্বত্য অঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন পর্যন্ত বেশ ভালো ফলন হচ্ছে। কারণ এখানকার আবহাওয়া, মাটি ও জলবায়ু কফি চাষের জন্য দারুণ উপযোগী। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের রংপুর ও নীলফামারিতেও এর ভালো ফলন দেখা গিয়েছে।
সিলেটের এক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন সানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যাক্তি যিনি প্রচুর চা/ কফি খাওয়া পছন্দ করতেন,যেহতু তিনি কফি খেতে বেশ পছন্দ করতেন তা,থেকে আগ্রহী হোন এই কফির প্রতি। তিনি সেখানকার কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রায় ২০০ টি চারা কিনে নিয়ে আসেন তার নিজ এলাকায় টাংগাইলের মধুপুরে। শুরু করে দেন তার বাবার জমিতে এই চারাগুলো লাগানো। চারা লাগানোর প্রায় তিন বছরের মাথায় তিনি ভালো ফলন পান। এটা দেখে উৎসাহিত হয়ে তিনি আরও একটি জমিতে এই কফির চারা লাগান এবং এখানেও তার প্রায় অনেক চারা আছে। যেখানে নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। তবে প্রথম বছরেই প্রায় (৭০-৮০) কেজি কফি উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।
কফি চাষ তো হলো ঠিকই কিন্তুু প্রসেসিং এ যত ঝামেলা। আর তাইতো তিনি স্থানীয় কৃষি বিভাগে সহায়তা চান। প্রথম দিকে তিনি যাঁতা কলেই ভাঙ্গিয়ে কফি বাজারে বিক্রি করেন। পরে অবশ্য স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে এগিয়ে এসে তাকে সহায়তা করেন এবং তার কফি চাষের প্রতি আগ্রহ দেখে আরো উৎসাহিত করেন। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেন টাংগাইলের মধুপুর ও সখিপুরের মাটি কফি ও কাজু বাদাম চাষে বেশ উপযোগী। আগ্রহীরে এদিকে এগিয়ে আসলে তাদের চাষের জন্যে জমি, চারা ও প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। যাতে করে এদিকটা এগিয়ে যেতে পারে অনেকটাই।
কারণ আমাদের দেশে কফির এতো চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগই আমদানি করতে হয়। প্রায় ৯৫% কফিই আমদানি নির্ভর। দেশে উৎপাদিত হয় তার বেশিরভাগই উৎপাদন হচ্ছে পার্বত্য জেলাগুলোতে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আমাদের দেশের আমদানিকৃত কফির পরিমাণ ৩২.৫৬৭ টন। এবং উৎপাদিত হয়েছে এদেশে মাত্র ৫৫ হাজার কেজি। বোঝাই যাচ্ছে কৃষি অর্থনীতিতে কতটা সম্ভাবনাময় এটি। এদিক থেকে এখানে কাজ করলে আমাদের দেশের বেকার সমস্যা অনেকটাই নির্মুল হবে।
যাই হোক,কফির রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রজাতি। এর মধ্যে বেশি চাষ হয় আফ্রিকাজাত কফিয়া বা রোবাস্তা কফি। এবং আর একটি জাত হলো কফি এরাবিকা। তবে রোবাস্তার ফলন বেশি হলেও স্বাদ হয় এরাবিকা। তাই চাহিদাও অনেকটা বেশি। আমাদের দেশে দুটি জাতই উৎপাদিত হচ্ছে। কফি চাষের জন্য পাহাড়ি অঞ্চল, যেখানে পানি জমবে না এমনকি সেচেরও দরকার হবে না এমন জমিই উপযোগী। তবে মাটি ঝুরঝুরে রাখতে হবে, কিছুটা ছায়া এবং কিছুটা রৌদ্রজ্বল পরিবেশও দরকার। এছাড়া মাটি হতে হবে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ। তবে কিছুটা রোগবালাই দেখা দিতে পারে। কিন্তুু তা খুব বেশি নয়। আর এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে। তারা কফি চাষের বিষয়েই একটি প্রজেক্ট গ্রহণ করেছেন যেখানে চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে, রোপন, মাটি প্রস্তুুত,জমি দেয়া, চারা দিয়ে ও প্রশিক্ষণ দিয়েও সহায়তা করছেন এমন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরণের উদ্যোক্তাদের। তাছাড়া আমাদের দেশে অনেক হার্টিকালচার রয়েছে যেখানে চারা উৎপাদন করতে পারে। এখানেও আগ্রহীদের সহায়তা দিতে উৎসাহিত করেছেন। কফির চারা উৎপাদন করতে ৬ মাস সময় লাগে।
কফি গাছ জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল আসে এবং নভেম্বর- ডিসেম্বর মাসেই ফল সংগ্রহ করা যায়। বিঘাপ্রতি ৪০০-৫০০ টি চারা লাগানো যায় এবং কেজিপ্রতি ৮০০-১০০০ টাকা করে বিক্রি হয়। কফি গাছ প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। যদিও তিন বছর পর থেকে ভালো ফলন হয় কিন্তুু ৬-৭ বছরে পরিপক্কতা আসে। তবে মজার কথা হচ্ছে কফির বাগানে পাশাপাশি অন্যজাতের ফলও করা যায়। যা থেকেও অনেক আয় হয়। মধুপুরের মহিষমারা গ্রামের সানোয়ার হোসেনও তাই করছেন এবং তাকে দেখে উদ্ভুদ্ধ হয়ে এদিকে অনেকেই এগিয়ে আসছেন।
কফির রয়েছে নানা গুণ। তবে মাত্রাতিরক্ত সেবনে হতে পারে বিপত্তি। তাই এদিকে নজর রেখে তা সেবন করতে হবে। ক্যাফেইনযুক্ত কফি সেবনে খেলাধুলায় প্রাণ পাওয়া যায়। যদিও হৃদপিণ্ডের গতি বাড়ায় তবুও কাজে উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়। তাই যেকোন খেলার আগে কফি পান করলে শরীরে আলাদা শক্তি পাওয়া যায়। কফি টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এমনকি মানসিক চাপের সময় ২০০ মি.গ্রা ক্যাফেইন শরীরে প্রবেশে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
এতো এতো চাহিদাসম্পন্ন একটি অর্থকরী ফসল এবং আমাদের দেশের আবহাওয়া যেখানে এতোটাই উপযোগী। আর এদিকে তো সহায়তা রয়েছেই বিভিন্ন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তাহলে এদিকটাই আগ্রহীরা এগিয়ে আসলে একদিকে যেমন নিজেদের চাহিদা মেটানো যাবে তেমনি রপ্তানি করে বৈদশিক আয়ও হবে। আর সেজন্য তো রয়েছেই ই- কমার্স সেক্টর। তাই যত উৎপাদনের খাত হবে ততই সম্ভাবনা বাড়বে বলে আশা করছি ই- কমার্স সেক্টরের মাধ্যমে। যারা কফি চাষ করতে চান তাদের জন্য পরামর্শ হলো,নিকতস্থ কৃষি সম্প্রসারন অফিসে যোগাযোগ করুন।।
মধু নাম শুনলেই ছোট বেলার এই কবিতার লাইন গুলো মাথায় আসবেই মৌমাছি মৌমাছি কোথা যাও নাচি নাচিদাঁড়াও না একবার ভাইঐ ফুল ফোঁটে বনে, যাই মধু আহরনেদাঁড়াবার সময় তো নাই
মৌমাছি মধু আহরণ করে ফুল থেকে, সেই মধু চাক থেকে সংগ্রহ করে মৌয়ালরা সেগুলো পরিস্কার করে আমরা খাই। মৌমাছি যেমন অনেক ফুল থেকে মধু আহরণ করে থাকে। আমাদের একটা ভুল ধারনা আছে তা হলো অনেকেই ভাবি যে ফুল মানেই বাগানের গোলাপ গাধা,শিওলি অমুক তুমুক ফুল,এসব ফুল যখন না থাকে তখনো কিন্তু মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে,কিভাবে? আমাদের আশেপাশের প্রায় সব গাছেরই ফুল হয়ে থাকে তো মাছিরা সেসব ফুল থেকেও মধু সংগ্রহ করে থাকে।
মৌমাছির অনেক প্রকার জাত রয়েছে,আমরা সাধারণত দুই জাতের মাছি বেশি দেখে থাকি,একটা হলো বুনোমৌমাছি আরেকটা বুনো হলেও তাদের বস করে পালন করা যায়।একটা একটু বড় আকারের হয় অন্যটা ছোট আকারের,একটা গাছের ডালে বাসা করে আরেকটা, মাটির গর্ত,মাচার নিচে, অথবা বাড়ির আনাচে কানাচে যেখানে মানুষের চলাচল একটু কম।
আকারে ছোট মাছি গুলো বাক্সে ভরে পালন করা যায়,আর এই বাক্স গুলোকে যখন সরিষা ক্ষেতের ভিতরে রাখা হয়, সে মাছি গুলো শুধু সরিষা ফুল থেকেই মধু সংগ্রহ করে তখন তার নাম হয়ে যায় সরিষা ফুলের মধু। আবার একই মাছিকে যদি সূর্য্যমুখির বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় তারা শুধু সূর্য্যমুখির মধু সংগ্রহ করবে তখন তার নাম সূর্য্যমুখি ফুলের মধু।
এভাবে এই মাছিগুলোকে যখন যে বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেইসব ফুলের মধু কালেক্ট করে দেয়।
অন্য দিকে বড় মাছি গুলো আপনি চাইলে তাড়িয়ে দিতে পারবেন কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও কোথাও বসাতে পারবেন না এটা সম্পুর্ণ তাদের ইচ্ছেতে।ছোট মাছি গুলোর রানি কে সরিয়ে নিলে তারা আপনার পিছু পিছু আসবে কিন্তু এই বড় মাছি গুলো তাও আসেনা। এজন্যই প্রাকৃতিক চাকের মধু খুবই কম পাওয়া যায়,তবে আমাদের টাংগাইলে এসব চাক প্রচুর পরিমানে আছে,তারপরো আমরা প্রাকৃতিক মধু পাইনা কারন কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী আসল নকল মিক্স করে চড়া দামে মুনাফা অর্জন করে থাকে।
আমি নিজেও এসব সম্পর্কে তেমন জানতাম না যদি না নিজে এসবের পিছনে ঘুরতাম,আমার উদ্যোগে প্রাকৃতিক মধু সেল করি তাই অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।
এক মৌয়ালের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি স্বিকার করে বলেন ভাইজান আমরা ন্যায্য দাম না পাইয়া এসব ভেজাল করি,সবাই চায় ভালো পন্য কিন্তু দাম দিতে চায় কম আমাদের কি দোষ কইন?. আমি কোন উত্তর দিতে পারিনি,আপনার কাছে কোন উত্তর আছে? পরে আমি সেই মৌয়াল কে আমার নাম্বার দিয়ে দিয়েছি যখনি কোন চাক পায় আমাকে কল দেয় আমি দাড়িয়ে থেকে চড়া দামে তার থেকে মধু সংগ্রহ করি।
চড়া দাম মানেই যে সেরা তাও কিন্তু নয়,তাই চড়া দাম যেমন দিব তেমনি চড়া মানের মধুটাও নিশ্চিত হয়েই নিব।। যাই হোক কাজের কথা হলো যেহেতু আমাদের টাংগাইলে প্রচুর প্রাকৃতিক চাক,এবং প্রচুর সরিষা ও অন্যান্য ফুলের চাষ হয়,তাই এখানে আমরা চাইলে প্রাকৃতিক অথবা চাষের মধু নিয়ে কিন্তু নিজেদের উদ্যোগ শুরু করতে পারি,বাজারে কিন্তু যথেষ্ট মধুর চাহিদা রয়েছে জাস্ট প্রমান করতে হবে আপনার টা সেরা মানেত কিনা।
এবার আসুন জেনে নেই মধুর উপকারীতা,কেন এটাকে সকল রোগের ঔষধ বলা হয়? মধু স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। মধু হজমে সহায়তা করে এবং ক্ষুধা বাড়ায়। সর্দি, কাঁশিতে খুবই কার্যকর। পুরনো আমাশয়, পেটের পীড়া সহ নানা রোগের উপশম করে। ত্বকের যত্নে মধু খুব কার্যকরী। হৃদরোগ এ মধুর ব্যাপক কার্যক্ষমতা রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মধু নিয়মিত খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা ঠিক থাকে এবং রক্ত স্বল্পতায় খুব দ্রুত কাজ করে । আলসার ও গ্যাস্ট্রিক এর জন্য উপকারি।। বাতের ব্যাথা সারাতেও বেশ কাজ করে শরীরের দূর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে৷ আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা জানি তাই বললাম এগুলো ছাড়াও শত রোগের ঔষধ হিসেবে মধু অতুলনীয়। মধুতে অনেক উপকরণ এর মধ্যে প্রধান হলো সুগার। আমরা কিন্তু সুগার সব সময় এড়িয়ে চললে ও মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রক্টোজ দুটি সরাসরি মেটাবোলাইজড হয়ে যায় যা ফ্যাট হিসেবে জমা হয়না। মধুতে অনেক ধরনের ভিটামিন, আয়রন, প্রোটিন , হরমোন, এসিটাইল কোলিন, বোরন, ক্রমিয়াম, সাইট্রিক এসিড, টারটারিক এসিড সহ আছে অনেক অনেক ধরনের উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনি শক্তিবর্ধক এবং বিভিন্ন রোগের উপশমে উপকারি।
হাসান সরকার ছালেহীন। অকৃত্রিমঃ সকল প্রকার অর্গানিক পন্যের নির্ভরযোগ্য অনলাইন সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান।
১★অনুপ্রেরণার জন্য অপেক্ষা করাঃ আমরা ততক্ষন কাজ শুরু করিনা যতক্ষন না আমরা অনুপ্রানিত হই।আপনি কাউকে বাইক বা সাইকেল চালাইতে দেখে অনুপ্রানিত হন আর অবাক হোন,কিন্তু নিজে চেষ্টা করেন না,আপনি জীবনেও পারবেন না ব্রো।চেষ্টা করার পর যদি আপনি তাদের দেখেন বা ফলো করেন তো অনেক কিছু দেখেই শিখে যাবেন।এটা মোটেও ঠিক নয়,আগে কাজ টা শুরু করে দিন। দেখবেন অনুপ্রেরণা নিজ থেকেও আসবে অন্যদের থেকেও পাবেন।
২★নিজে সব কিছু করার চেষ্টা করাঃএটা কিছু ক্ষেত্রে ঠিক আছে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা ভুল,রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে নিজেই ঠিক করতে লেগে পরেন? একটু চেষ্টা করেন তারপর মেকানিক ডেকে আনেন।আমরা চাইলেই সব একা করতে পারিনা এটা মনে রাখতে হবে।যা পারি সেটা ভালো করে করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি যা আমার দারা সম্ভব না সেটা অন্যকে দিয়ে করানোই ভালো।কেননা আপনি সে কাজ ভালোভাবে করতে গেলে অনেক সময় আপনার অপচয় হয়ে যাবে,সেই সময়টা আপনার কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৩★লোকে কি বলবেঃলোকে কি ভাববে সেটা যদি আমি,আমরা ভাবি তাহলে লোকে কি ভাব্বে?অন্যের কথা ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে সময় দেয়া উচিৎ। আপনি যত ভালো কিছুই করতে যান না কেনো লোকে তাতে নেগেটিভিটি ছড়াবেই।আপনার লক্ষ হবে এক্টাই,সময়ের কাজ সময়ে শেষ করা চাই পাছে লোকে যা ইচ্ছে বলুক তাইআমি কি লোকের টা খাই?
৪★লাইফ ব্যালেন্সঃ দিনরাত কাজ করতে থাকলেই যে কাজে পারদর্শী হবেন এমন নয়,বরং রিফ্রেশমেন্ট অনেক উপকারি আপনার কাজকে আরও সুন্দর করতে।কাজে ব্রেক দিন আবার কাজ করুন তাতে কাজের মান আরও উন্নত হবে।জীবনে শুধু কাজ করে গেলেই হবে জীবনকে উপভোগ ও করতে শিখুন,পরিবারকে সময় দিন,বন্ধু বান্ধবের সাথেও আড্ডা দিন,এতে মন মেজাজ ফুরফুরে হবে কাজে গতি আসবে,সুস্থ দেহ সতেজ মন আপনার কাজে প্রান এনে দিবে।
৫★হেরে যাওয়ার ভয়ঃকোন কাজ শুরুর আগেই যদি ভাবেন যদি হেরে যাই,যদি না জিততে পারি কি হবে।আপনি কোন প্রতিযোগিতায় যদি অংশগ্রহণ করেন তাহলে হয়ত জিতবেন নাহয় হারবেন,আর যদি অংশগ্রহণ নাই করেন? এমনেই হেরে বসে থাকবেন।কি করবেন আপনার ইচ্ছে,চেষ্টা করে হারবেন নাকি চেষ্টা ছাড়াই হার মেনে নিবেন? হারুন জিতুন সমস্যা নেই প্লিজ খেলতে তো নামুন।
৬★অজুহাতঃ সফল মানুষদের দুইটা হাত আর আমাদের তিনটা,৩য় নাম্বার হলো অজুহাত। যখনি কিছু করতে যাব এ হাত আমাদের সামনে হাজারো অভিযোগ নিয়ে আসবে,তুমিও সফল হতে পারতে,কিন্তু তোমার ভাগ্য ভালোনা,তুমি মেধাবী নও,তোমার বাপের টাকা পয়সা নাই,তোমার সমাজ ভালো না,দেশ ভালোনা,দেশের সিস্টেম ভালোনা এমন হাজারো অভিযোগ করে আমাকে বন্দি করে রাখে।যদি সম্ভব হয় এটা করুন,এই অজুহাতকে ভেংগে নিজেকে বলুন আমি কি করতে পারি চল দেখাই,এটা বলে শুরু করুন প্রথমে নাহয় হারুন,কিন্তু পরের বার ঠিকই জিতে যাবেন।
7★অপরিপুর্ণ কাজঃ আমরা অনেক সময় কাজ শেষ করার আগেই ছেড়ে দেই এটা পরের কাজের উপর চাপ বাড়ায়।ধরেন আপনি একটা সিনেমা দেখছিলেন মাঝ পথে অন্য একটা কাজ শুরু করলেন আপনার মন কখনো সেই সিনেমায় চলে যাবে আবার কখনো এই কাজে,এভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভালো রেজাল্ট সম্ভব নয়। যেটাই করুন তা শেষ করে অন্য কাজে হাত দিন।
৮★সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করাঃএই দুনিয়ায় ৭শ কোটি লোক,এদের কজন কে আপনি খুশি রাখতে পারবেন? আপনার সেরা টা দিয়ে হলেও বড় জোর, ১০০/২০০/২ হাজার মানলাম ২ কোটি লোককে আপনি খুশি করতে পারবেন,কিন্তু বাকি থাকবে ৬৯৮ কোটি।আপনি অন্যদের খুশি করতে না করছি না,অন্যের ভালো অবশ্যই করবেন তবে নিজের বারোটা বাজিয়ে নয়।৭০০ কোটি মানুষ কে খুশি করার আগে নিজেকে খুশি করুন,তাহলেই অন্যদের খুশি করা সম্ভব হবে আপ্নার জন্য।যে নিজেই অসুখি সে অন্যকে কিভাবে সুখি করবে?যার নিজেরই কিছু নাই সে কিভাবে অন্যকে সাহায্য করবে?
9★অন্যের সাথে তুলনা করাঃ এই গুন বা বেগুন যাই কন এটা আসলে আমরা জন্ম থেকেই দেখে শুনে নিজেদের মগজে ঢুকাই ফেলছি,জন্মের পর থেকে শুরু হয় তুলনা,অমুকের ছেলে টা কত্ত ভালো আর আমাদের টা কালো,অন্যের সন্তান পড়াশুনোয় ভালো আমাদের টা পাজির হাড্ডি,অমুক আমার সম বয়সি অথচ ইনকাম আমার চেয়ে ১০ গুন,অমুকের চেয়ে আমার এই জিনিস টা কম।তাই আমি পারিনাই,অমুকের ভাগ্য ভালো আমার খারাপ তাই হচ্ছেনা।এগুলো ছাড়তে হবে ব্রো।তুলনা করতে হলে নিজের সাথে করুন,নিজের সাথেই প্রতিযোগিতা করুন।
১০★একই ভুল বার বার করাঃমানুষ মাত্রই ভুল করবে এটাই সাভাবিক,কিন্ত যদি কেউ একই ভুল বার বার করে সে কি?অমানুষ? না ভাই লুজার মানুষ,যাদের আসেনা কভু হুশ।ভুল করুন তা থেকে শিক্ষা নিন,এগিয়ে যান।বার বার একই ভুল করে বসে থাকলে আর আগানো হবেনা কোনদিন। কোন সচেতন মানুষ কি একই ভুল বার বার করবে? মোটেও না। সিরিয়াস হোন,আগের ভুলগুলো দেখে শিক্ষা গ্রহন করুন।
১১★সু সময়ের জন্য অপেক্ষা করাঃ আমি কেবল মাস্টার্স পড়ছি এখনি বিজনেস শুরু করব? না আগে পড়াশোনা শেষ করি তারপর দেখা যাবে,আগে একটু সোজা হয়ে নেই তারপর এই কাজ টা শুরু করব,আগে কিছু টাকা পয়সা হোক তারপর করব,পারিবারিক ঝামেলায় দিন যাচ্ছে এগুলো কাটুক তারপর কিছু করার চেষ্টা করব। আসলে জীবনে সবুজ বাত্তি কখনো আসেনা,সবুজ বাতির আশা ছেড়ে কাজে নেমে পরেন।সময় হোক দেখা যাবে এই কথাটা একদম ছাড়তে হবে আমাদের।
১২★কোন কাজটা বেশি জরুরিঃধরেন আপনি আজকে যে কাজ গুলো করবেন তার একটা লিষ্ট করে রেখেছেন গত কাল,কিন্তু আজ সবগুলো করতে পারবেন না মনে হচ্ছে,তো কোনটা করবেন আর কোনটা রেখে দিবেন এটা ভেবেই অনেক সময় চল যায়,তাই খুব জরুরী গুলো আগে লিখে রাখুন,যেগুলো পরে করলেও ক্ষতি নেই সেগুলো পরে লিখুন,অতি প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সময় পেলে সেরে ফেলবেন না পেলে আগামিকাল করবেন।
১।সঠিক সময়ে সঠিক প্রশ্ন করাঃসেটা হতে পারে নিজেকে বা অন্যকে,উনারা সব সময় নিজের কাজ সম্পর্কে সঠিক প্রশ্ন করে তার উত্তর কালেক্ট করেন।অন্যদের থেকেও ঠিক তাই করেন সঠিক তথ্য জেনে নেন।
২।গুরুত্বঃ কোন কাজকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তা ঠিক করে নেন আগে ভাগেই,আমরা অনেক সময় কোনটা রেখে কোন কাজ টা করব ভেবে চুপচাপ বসে থাকি কোন কাজই সেসময় ভালো ভাবে করা হয়না।
৩।দায়িত্বঃ সমস্যায় পরলে আমরা ডিপ্রেশনে ঝিমাই,আর সফল ব্যাক্তিরা সমস্যার সমাধান খুজে বের করেন এবং তার সলিশন নিজে করার চেষ্টা করেন।।আপনার ঘরের চালা থেকে পানি পরছে,আপনি চোখের পানি,রাগ অভিমান,অভিযোগ করে কি তার সমাধান করতে পারবেন? আমরা এমনই করি।
৪।ঝুকিঃ নো রিস্ক নো গেইন এই বাক্যে পুরোপুরি ভরসা রাখেন উনারা।তারা সময় শ্রম অর্থ সব বাজি রেখে আপন মনে কাজ করে যান।আর আমরা কি করি তার উল্টো আচ্ছা মেনে নিলাম যে ২ লাখ টাকা ইনভেস্ট করব,কিন্ত আমার ইনকাম কত হবে? কবে থেকে হবে? এসব প্রশ্ন করে যখন উত্তর আসে সেটা সময়ের উপর নির্ভর করবে,কাজের উপর নির্ভর করবে,আমরা হাল ছেড়ে দিয়ে ১৫-২০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চাকরি খুজতে শুরু করি।
৫।সঠিক লোকেদের সঙ্গ দেয়াঃ শাহরুখ খান যখন তার বন্ধু বেনি থমাস কে বলেছিলেন,দোস্ত আমি মুম্বাই গিয়ে অভিনেতা হতে চাই,সে বলেছিল,আরেহ এসব ছারতো কে দেখবে তোর অভিনয়? অথচ দেখুন আজ কে না দেখে তার অভিনয়? আমাদের সবার লাইফেই এরকম হাজারো বন্ধু বান্ধব আত্নীয় আছে যারা আপনাকে পিছিয়ে দিবে তাদের সঙ্গ ছাড়ুন।যারা নেগিটিভিটি ছড়ায় তাদের এড়িয়ে চলুন।
৬।পজেটিভ থিংকিংঃ শত বাধা বিপত্তিতেও সফল ব্যাক্তিরা পজেটিভ চিন্তা করেন।তাদের মতে পজেটিভ চিন্তা ও কাজ করলে পজেটিভ রেজাল্ট পাওয়া যায়।আর আমাদের চিন্তা হলো আগে নেগেটিভ, ব্যবসা শুরু করার আগেই ভাবি যদি লস হয়,যদি গ্রাহক না পাই,যদি অমুক হয় যদি তমুক হয়।
৭।স্মার্ট ওয়ার্কঃ সফল ব্যাক্তিরা স্মার্ট ওয়ার্কে বিলিভ করে আর আমরা হার্ডওয়ার্কে।আমাদের চিন্তা ধারা কাজ কাম হলো এনালগ সিস্টেমের তাদের সব ডিজিটাল সিস্টেমে চলে।আমরা ভাবি এখন কি করব তারা গতকাল ভেবে রেখেছেন এখন তা করছেন।
৮। শারিরিক ব্যায়াম ও মেডিটেশনঃ এটা সকল সফল ব্যাক্তিরাই করে থাকেন,কিন্তু আমরা ভাবি এসব আমাদের জন্য নয়,আসলে কি তাই?আমরা ভাবি তারা এত শক্তি,মনবল কই পায়? অথচ এগুলো আমাদের জন্য নয় ভেবে এড়িয়ে যাই।
৯। নো গোলস নো প্রগ্রেসঃ আপনার রকেটের পিছনে আগুন লাগাইলেন সে রকেট উড়ে চলল,কিন্তু সেটার গন্তব্য কোথায় আপনি জানেন না!কি হবে? সময় নষ্ট, ফুয়েল নষ্ট,অবশেষে রকেট ক্র্যাশড হয়ে অমুক সাগরে ভূপাতিত। কই যাবেন তা আগে শিওর হোন,তারপর আগুন লাগান
১০। শিক্ষার আগ্রহঃ প্রতিটি বিখ্যাত লোকদের স্বভাবে খেয়াল করুন দেখুন তাদের মধ্যে এই গুন বা অভ্যাস রয়েছে।আর আমাদের? ধুরো আর কত পড়ব? আর ভাল্লাগেনা।অনেক পড়েছি কি ঘন্টা মিলেছে পড়ে? সিলেবাসের বই তে বাস্তবতার ঘন্টা কখনো মিলবে না ব্রোসিলেবাসের বাইরে আসুন অনেক ঘন্টা মিলবে ইনশাআল্লাহ।